ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় পরিচালনা কমিটির অনুমোদন ছাড়াই মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নিতে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে মাইকিং করায় জেঠাগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শনিবার বিকেলে প্রধান শিক্ষকের এমন মাইকিং করায় রাতেই এটি বাতিলে প্রশাসনের উদ্যোগে মাইকিং করানো হয়।
করোনার এই সময়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত হতে মাইকিং করায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৌকত ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে প্রধান শিক্ষক পলাতক রয়েছেন।
বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার উপজেলার জেঠাগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পক্ষে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত এক যুবক মাইকিং করে ১৮ মে (সোমবার) সকাল ১০টার সময় সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে বলে জানানো হয়। এছাড়া অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের টাকা নিয়েও বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে হবে। আদেশক্রমে প্রধান শিক্ষক সৌকত ইসলাম। পরে সন্ধ্যার সময় বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নিতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত হওয়ার বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের মাইকিংয়ের বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কড়া সমালোচনা করেন।
জানা গেছে, এ বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮১৯ জন। বর্তমানে শিক্ষক রয়েছেন ১৪ জন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে উপজেলা প্রশাসন প্রধান শিক্ষকের মাইকিংয়ের বিষয়টি জানতে পারেন। প্রধান শিক্ষকের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা আশারাফীর সঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম ও নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুর রহমানকে নিয়ে রাত ১১টায় জেঠাগ্রামে উপস্থিত হন। বিদ্যালয়ের পরিচালানা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।
মাইকিংয়ের বিষয়ে আব্বাস উদ্দিন কিছু জানেন না বলে জানন। রাত ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত এবং সেহরীর সময় মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নিতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের মাইকিংটি সঠিক নয় বলে ছয়টি মসজিদের মাইকের মাধ্যমে জানানো হয়। রবিবার সকালেও প্রধান শিক্ষকের মাইকিংটি সঠিক নয় বলে মাইকিং করানো হয়।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্বাস উদ্দিন জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। পরিচালনা কমিটির অনুমতি ব্যতিত এমনটি করায় প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা আশরাফী জানান, বিষয়টি জানতে পেরে রাতেই গোকর্ণ ইউনিয়নে যাই। রাত দেড়টা থেকে সেহরী পর্যন্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের মাইকিংটি সঠিক নয় বলে আশপাশের একাধিক মসজিদের মাইকের মাধ্যমে জানানো হয়।