গাজীপুর মহানগরের গাছার উত্তর খাইলকৈর এলাকায় রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে বোর্ড প্রশপত্র ফাঁসকারী চক্রের এক সদস্যকে আটক করেছে র্যাব। আটক মো. আবু বক্কর সিদ্দিক (২৮), কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থানার লাখহাটি গ্রামের মো. আব্দুস সোবাহানের ছেলে।
র্যাব-১-এর সহকারী পরিচালক মো. মোর্শেদুল হাসান জানান, উত্তর খাইলকৈর মাদরাসা রোডের মমতাময়ী বিদ্যানিকেতনের সামনে রোববার দিবাগত রাতে প্রশ্নফাঁসকারী চক্রের কতিপয় সদস্য অবস্থান করছে। এ খবরে ওই এলাকায় গিয়ে অভিযান চালানো হয়। পরে সেখান থেকে আবু বকরকে আটক করা হয়। এসময় প্রশ্নফাঁসের কাজে ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। ওই মোবাইল ফোনে তথ্য বিশ্লেষণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপারে বিভিন্ন সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে।
আটক মো. আবু বক্কর সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আবু বক্কর ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সাইন্স (ইউআইটিএস) এ বিএসসির (৩য় বর্ষ) এবং পাশাপাশি সে স্থানীয় মমতাময়ী বিদ্যানিকেতন স্কুলে শিক্ষকতা করে। এছাড়া সে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্র, ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়ায়। ছাত্র, ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়ানোর আড়ালে বিগত ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে ফেসবুক আইডির মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু করে।
সে ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে বিভিন্ন ছাত্র, ছাত্রীদের সাথে মেসেজের মাধ্যমে প্রলোভন দেখালে অনেক সুযোগ সন্ধানী ছাত্র, ছাত্রী তার সাথে যোগাযোগ করে। এভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক মেসেঞ্জার, ইমো ও হোয়াটস্অ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার ছাত্র, ছাত্রীদের কাছে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে মোটা অঙ্কেরর টাকা আয় করে আবু বক্কর সিদ্দিক। অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে ছাত্র, ছাত্রীদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়ে তাদের প্রশ্ন সরবরাহ করার পরে প্রশ্নগুলো সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমো থেকে ডিলেট করে দিতো সে।
আবু বক্কর আরও জানায়, কখনো পূর্বের বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কাটছাট করে, এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে নিজেই প্রশ্নপত্র তৈরি করে সরবরাহ করতো সে।
এভাবে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন সরবরাহ করে আবু বক্কর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিকাশ ও বিভিন্ন পন্থায় মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে জানা গেছে।
আসামির দেওয়া তথ্য উপাত্ত যাচাই বাছাইয়ের ভিত্তিতে এই চক্রের সাথে জড়িত অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে র্যাব।