ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে যশোরের মনিরামপুরে অর্ধশতধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ প্রায় দেড় হাজার ঘরবাড়ি ভেঙে বিধ্বস্ত হয়। ইতোমধ্যে সরকার দরিদ্রদের ঘরবাড়ি সংস্কারের জন্য তিনশ' বান ঢেউটিন এবং ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংস্কারের জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি এ পর্যন্ত। অর্থাভাবে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংস্কার কাজ চলছে না। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস জানায়, ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে মনিরামপুর উপজেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ প্রায় দেড় হাজার ঘরবাড়ি ভেঙেচুরে যায়। এর মধ্যে রইচ উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসা, দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মনিরামপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হোগলাডাঙ্গা-কোটামারা-কাজিরগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চাঁদপুর মাঝিয়ালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, টেংরামারী সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মনিরামপুর কারিগরি ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, সবুজপল্লী কলেজ, ধলিগাতী আলিম মাদ্রাসাসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠান সংস্কারের জন্য সরকার এখনও কোনো অর্থ বরাদ্দ করেনি। ফলে অর্থাভাবে এসব প্রতিষ্ঠান সংস্কার করা হয়নি। টেংরামারী সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাস চন্দ্র জানান, ২০ মে ঝড়ে বিদ্যালয়ের পাঁচটি কক্ষ ভেঙেচুরে তছনছ হয়ে গেছে। কিন্তু ফান্ডে টাকা না থাকায় সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। একই কথা জানান পৌর শহরের দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল ফিরোজ। তিনি জানান, একে তো বিদ্যালয় ভবন জরাজীর্ণ, তার ওপর ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি কক্ষের চাল এবং দেয়াল ভেঙেচুরে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হবে। রইচ উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবুল হাসান জানান, তার মাদ্রাসার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো অর্থ বরাদ্দ হয়নি, তাই সংস্কার করা হয়নি। এ ছাড়াও ম্যানেজিং কমিটি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বর্তমানে করোনা মহামারির কারণে সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কিন্তু খুললে শ্রেণিকক্ষের অভাবে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখছেন না সংশ্নিষ্টরা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি মোট ৩৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা হাতে পেয়েছেন, যা ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের জন্য এখনও কোনো অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি।