চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর ২০ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শাহ আমানত ও সোহরাওয়ার্দী হলে তল্লাশি চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এদের মধ্যে চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের ১২ জন ও বিজয়ের ৮ নেতা-কর্মী রয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এস এম মনিরুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রক্টর আর পুলিশের গাড়ি ভেঙেছে। তাদের অনেক ছাড় দেয়া হয়েছে। এখন অপরাধীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া দুই হল থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই বাছাই শেষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে বুধবার বিকেলে নিজেদের তিন কর্মীকে মারধর ও কুপিয়ে জখম করার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সন্ধ্যায় অবরোধের ডাক দেয় ছাত্রলীগের উপপক্ষ ‘বিজয়’। এ ঘটনার জেরে ক্যাম্পাসের সোহরাওয়ার্দী ও শাহ আমানত হলের সামনে সংঘর্ষে জড়ান বিজয় ও চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের (সিএফসি) নেতা-কর্মীরা।
মারামারিতে জড়িত সিএফসি ও বিজয় দুই উপপক্ষই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। বর্তমানে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ রয়েছে। একটি সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং অন্যটি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী। এই দুই পক্ষের মধ্যে আরও ১১টি উপপক্ষ রয়েছে। গত পাঁচ বছরে এসব উপপক্ষের মধ্যে অসংখ্যবার সংঘর্ষ ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: চবিতে ছাত্রলীগের দুইপক্ষের ফের সংঘর্ষে আহত ২, অবরোধের ডাক
পুলিশ ও ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, বুধবার বিকেল চারটার দিকে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সিএফসির এক কর্মীকে মারধর করেন বিজয়ের কর্মীরা। এর জের ধরে বিকেল পাঁচটার দিকে সোহরাওয়ার্দী হলে গিয়ে বিজয়ের দুই কর্মীকে মারধর ও একজনকে কুপিয়ে জখম করেন সিএফসির নেতা-কর্মীরা।
ঘটনা জানাজানি হলে বিজয়ের নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হল এবং সিএফসির নেতা-কর্মীরা শাহ আমানত হলের সামনে জড়ো হন। তাদের হাতে লোহার রড, লাঠিসোঁটা ও রামদা দেখা যায়। এ সময় দুই উপপক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও পুলিশ এসে তাদের ছাত্রভঙ্গ করে দেয়। পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী ও শাহ আমানত হলে তল্লাশি চালিয়ে লোহার রড ও কাচের বোতল নিয়ে যায়।
সিএফসির হামলায় আহত অবস্থায় আবু বকর নামের বিজয়ের এক কর্মীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বাকিদের বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এ দিকে বিজয়ের কর্মীদের মারধরের প্রতিবাদে ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হকের পদত্যাগের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেয়া হয়েছে।
অবরোধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজয়ের নেতা ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস। তিনি অভিযোগ করে বলেন, অতর্কিতভাবে তাদের কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে সিএফসি। সিএফসির নেতা রেজাউল হকের নির্দেশে এই হামলা চালানো হয়। তাই রেজাউল হককে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার ও হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি না দেয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে।