বরগুনায় চীন থেকে আসা এক শিক্ষার্থী জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়লে তাকে জেলার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার তিনি দেশে ফেরত এলে পরের দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে স্বজনদের সহযোগিতার তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। ওই শিক্ষার্থী জ্বরে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত করেছেন বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ুন শাহীন খান।
২২ বছর বয়সী ইমরান হোসাইন বরগুনা সদর উপজেলার ৯নং এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের মোখলেছুর রহমানের ছেলে।
এদিকে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পটুয়াখালী স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল ইমরানের রক্তসহ অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার মহাখালী আইইডিসিআর এ পাঠানোর জন্য।
জানা যায়, বরগুনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে বৃত্তি পেয়ে তিন মাস আগে পড়াশোনার জন্য চীন গিয়েছিল ইমরান। তিনি শানডং প্রদেশের রিজাউ শানডং ইউনিভার্সিটিতে পড়ছিলেন। এরপর চীনে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়লে পরে সে শহর থেকে ৩৬ ঘণ্টা ট্রেন ভ্রমণ করে চীনের গুরাংজু বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখান থেকে বিমানে করে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় ফিরে আসেন ইমরান। রোববার দুপুরে ঢাকা থেকে বাড়িতে ফেরেন। এরপর তার জ্বর আসে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাতে তাকে বরগুনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চীন ফেরত অসুস্থ শিক্ষার্থী ইমরান বলেন, তিনি চীনের স্যানডং প্রদেশের রিজাউ পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী। শনিবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আসেন তিনি। এসময় বিমানবন্দরে তাকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হয়। শনিবার তিনি ঢাকা থেকে যাত্রা করে রোববার সকালে তিনি বরগুনায় তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান। এরপর সন্ধ্যায় পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে এনে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন বলে দাবি করেন।
সোমবার দুপুরে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বরগুনা জেলার সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ন শাহিন জানান, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের নির্দেশে চীন থেকে আসা ইমরানকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হয়েছে এবং তার নাক থেকে নেজোফ্রিনজেল সোয়াফট ও গলা থেকে সোয়াফট সংগ্রহ করে ঢাকায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়নি। তাই কেউ যাতে আতঙ্কিত না হয় এবং গুজব না ছড়ায় সেদিকে সচেতন হতে আহবান জানান তিনি।
ইমরানসহ বরগুনা জেলায় চীন থেকে ৪ জন এসেছেন। অন্যদের জ্বর বা কোনো উপসর্গ দেখা না দেওয়ায় তাদের নিজ বাড়িতে রেখে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নজরদারিতে রেখেছেন।