মাদরাসাছাত্রীকে গণধর্ষণ মামলায় তিন যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন খাগড়াছড়ি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত। অনাদায়ে আরো ১ বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ট্রাইব্যুনালের বিচারক খাগড়াছড়ির জেলা ও দায়রা জজ রত্নেশ্বর ভট্টাচার্য এ রায় দেন। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন দীঘিনালা উপজেলার মেরু ইউনিয়নের বাচামেরুং এলাকার মর্তুজা আলীর ছেলে ইসমাইল হোসেন (২৭), মৃত আক্কাছ আলীর ছেলে ফারুক হোসেন (২৭) এবং বড় মেরুং এলাকার মো. ইছহাক মিয়ার ছেলে ইমন হোসেন (২৫)।
আদালত রায়ে বলেছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(৩) ধারায় অভিযোগটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো ১ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
আদালত তাঁর পর্যবেক্ষণে আরো বলেছেন, মামলার ২০ সাক্ষীর মধ্যে তিন চিকিৎসকসহ ১২ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামিরা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ এ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ অপরাধে আসামিদের মৃত্যুদণ্ডই হওয়ার কথা। কিন্তু আসামিদের বয়স বিবেচনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হলো।
২০১৪ সালের ১৮ জুন দুপুরে জেলার দীঘিনালা উপজেলার বাচামেরুং দক্ষিণপাড়ার দুলালের পাহাড়ের নিচে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয় মাদরাসার এক ছাত্রীকে। জানা গেছে, দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফিরছিল। অভিযুক্ত আসামিরা তাকে একা পেয়ে হাত, মুখ ও পা বেঁধে পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণ চেষ্টার ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণ করে রাখে। ওই ঘটনায় একই রাতে তিন যুবকের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন নির্যাতিতার মা।
বৃহস্পতিবার শেষ বিকেলে আদালতের রায় শোনার পর নির্যাতিতার মা সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘ন্যায় বিচার পেয়ে খুশি।’
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানান।
এর আগে ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ধারণের কারণে পর্ণগ্রাফি আইনে ওই তিন আসামির ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ২০১৬ সালের ৭ জুন খাগড়াছড়ির চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আসাদুজ্জামান মিয়া ওই আদেশ দেন।