রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (রামেবি) ক্যাম্পাস নির্মাণকাজ দুই বছর আগে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেও জমি জটিলতায় সেই কাজ এখনো শুরু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এমনকি এখন পর্যন্ত নির্ধারণ করা যায়নি ভবনটি কোথায় নির্মিত হবে। অথচ এর জন্য দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে রেখেছে সরকার। উপাচার্যের (ভিসি) ব্যর্থতার কারণেই এ জটিলতা দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে নানা অপকর্মের অভিযোগে আলোচনার কেন্দ্রে থাকা ভিসি মাসুম হাবিবকে এরই মধ্যে সিন্ডিকেট সভা করে অর্থ কমিটির চেয়ারম্যান (কোষাধ্যক্ষ) থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তাঁর স্থলে দায়িত্ব দেয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া ডিন ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খানকে। গত পঞ্চম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সূত্র মতে, এ বছরের মধ্যে রামেবির মূল ক্যাম্পাসে কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জমি অধিগ্রহণেই আটকে গেল রামেবির কার্যক্রম। গত ১৬ নভেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব রামেবির জন্য নির্ধারিত জমি দেখতে এসে ক্ষুব্ধ হন। এরপর তিনি অন্য জায়গায় জমি অধিগ্রহণের নির্দেশ দেন।
যে জমিটি উপাচার্য ডা. মাসুম হাবিব পছন্দ করেছিলেন, সেটি বরাদ্দ নিয়ে বসবাস করছে শতাধিক পরিবার।
মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পিছিয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন চিকিৎসক নেতা ও সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
রামেবি সিন্ডিকেটের সদস্য ডা. নওশাদ আলী জানান, যে জমিটি দেখা হয়েছিল, সেটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নাকচ করে দিয়েছে। এখন নতুন করে আবার জমি দেখতে হবে। তাতে এর কার্যক্রম আবারও অনেকটা সময় পিছিয়ে গেল।
সরকার গত অর্থবছরে রামেবির জন্য দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। মূল ক্যাম্পাসের জন্য রাজশাহী মহানগরীর বড়বনগ্রাম মৌজায় প্রায় ৮৫ দশমিক ৮০৭ একর জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু গত দুই বছরেও জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়নি। কিন্তু এখন সেখান থেকে সরিয়ে নগরীর নওদাপাড়া এলাকায় রামেবির ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য জমি পছন্দ করা হয়েছে। এখানে প্রায় ৫০ একর জায়গা দেখা হয়েছে। তবে মাঝখান দিয়ে রয়েছে রাস্তা। রাস্তার দুই পাশে জমিটি অধিগ্রহণ করে ক্যাম্পাস নির্মাণে আপাতত একটি পরিকল্পনা পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক হামিদুল হক জানান, ভূমির শ্রেণির কারণে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বড়বনগ্রাম মৌজার জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে না। নতুন জায়গা নওদাপাড়ায় দেখা হয়েছে।
এদিকে রামেবির ভিসি মাসুম হাবিবের কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি বলেন, ‘উনি একজন অযোগ্য লোক। তাঁকে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চলবে না। এই লোকের কারণে রামেবির অনেক ক্ষতি হয়েছে। এভাবে চলতে দেয়া যায় না।’
রামেবির একটি সূত্র জানায়, ভিসি ঢাকায় একটি প্রাইভেট চশমার দোকানে প্র্যাক্টিস করেন বলে রামেবির লিয়াজোঁ অফিস করা হয়েছে ঢাকায়। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম ঢাকায়ই চলে।