সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে শেরপুরের ঝিনাইগাতী সরকারি মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠ। বৃষ্টি বন্ধ হলে দুই থেকে তিন দিন সময় লাগে যায় মাঠের পানি সরতে। আর জলাবদ্ধতার দিনগুলোতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাইকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ ছাড়া জলবদ্ধতার কারণে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা, সৃজনশীল কাজ ও প্রতিদিনের সমাবেশ (অ্যাসেম্বলি) বিঘ্নিত হচ্ছে।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ের পাশে বাজারের প্রধান সড়কের চেয়ে প্রায় দেড় ফুট নিচুতে বিদ্যালয় মাঠ। এছাড়া বিদ্যালয়ের তিনপাশে নতুন করে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাও ভেঙ্গে পড়েছে। এতে শুষ্ক মৌসুমে বিদ্যালয়ের মাঠ শুকনা থাকলেও বর্ষা মৌসুমে শুরু হয় দুর্ভোগ। সামান্য বৃষ্টিতেই মাঠে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। এতে শিক্ষার্থীরা কাঁধে বইয়ের ব্যাগ, একহাতে জুতা নিয়ে অন্য হাতে পড়নের কাপড় তুলে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে। আবার অনেক সময় কাপড় ভিজে যায়। একই সমস্যায় পড়েন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীরাও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের পাশে ঝিনাইগাতী সদর বাজারের প্রধান সড়ক থেকে বিদ্যালয়টি প্রায় দেড় ফুট নিচুতে অবস্থিত। সেখানে সঠিকভাবে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। বিদ্যালয় মাঠে জমে থাকা পানিতে চার-পাঁচজন শিশু খেলা করছে। বিদ্যালয়ের ল্যাব ও বিজ্ঞানাগারের বারান্দায় একজন দাঁড়িয়ে জাল ফেলে মাছ ধরছেন । বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষকদের কক্ষেও ঝুলছে তালা।
এলাকাবাসী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে সরকারিকরণ করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৮১১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ২৫ জন।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শিহাব ও রাকিবুল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, বৃষ্টির দিন সামান্য বৃষ্টিতেই বিদ্যালয়ের মাঠে হাঁটু পানি জমে। এতে স্কুলের পোশাকের সঙ্গে জুতা পরার কথা থাকলেও তা পরা যায় না। স্যান্ডেল পরে এলেও তা হাতে নিয়ে ক্লাসে ঢুকতে হয়।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) হারুন অর রশিদ বলেন, বৃষ্টি হলেই বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আর ওই জলাবদ্ধতা কোনো কোনো সময় তিন দিন ধরেও থাকে । আর ওই দিনগুলোতে প্রতিদিনের সমাবেশ (অ্যাসেম্বলি) করানো যায় না। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারেন না। সমস্যা সমাধানে দ্রুত সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকতার্র হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আব্দুল হামিদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রত্যেক বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারে না। সৃজীনশীল কাজ বাধাগ্রস্ত হয়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা ও মাঠে মাটি ভরাট করলে সমস্যাটা সমাধান হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি রুবেল মাহমুদ বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে জলাবদ্ধতার বিষয়টি আগামী সভায় আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।