জানেন কি? কত সহজে পড়া যায় বই! - দৈনিকশিক্ষা

জানেন কি? কত সহজে পড়া যায় বই!

বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন |
পড়ি, পড়ছি আর জানছিতো অনেক বই। কিন্তু ঠিক অভ্যেসটা গড়ে উঠছে তো? যাই হোক দীর্ঘ শেখার যাত্রায় আপনাকে স্বাগতম।
 
Thomas Oppong প্রতি সপ্তাহে একটি করে নতুন বই পড়ার চেষ্টা শুরু করেন। এবং প্রতি শুক্রবার তার নিউজফিডে নতুন পড়া বই নিয়ে রিভিউ শেয়ার করতে থাকলেন।
 
বলুনতো এর ফলাফল কি হলো? ব্যক্তিত্বের উন্নয়ন ঘটতে থাকলো ক্রমশ। তাকে নতুনভাবে চিন্তা করতে বাধ্য করালো এবং জীবনকে আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করতে শেখালো। পড়ার অভ্যেস দিনে দিনে তাকে ভালো লেখক করে তুলছিল।
  
 
 
তার মতে, “আমি এখনো শিখছি কেমন করে লিখতে হয়? আমি ভালোবাসি আমার চিন্তাগুলো ছড়িয়ে দিতে, ভালো লাগে লেখার প্রেরণা যোগাতে। আর বই পড়া আমাকে এই লেখার দক্ষতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে।”
 
Stephen King বলেছিলেন, “খুব সহজ। যদি পড়ার জন্য আপনার সময় না থাকে, তবে লেখার জন্যও আপনার সময় বা সুযোগ কোনোটাই থাকবে না।”
 
বই পড়া আপনার হৃদয়কে উন্মুক্ত করে দেয়। যেন নতুন ধারণা, নতুন সংস্কৃতি এবং নতুন দর্শনগুলো আপনি নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারেন।
 
 
 
কিন্তু পড়তে যে সময় লাগে? !!
আমাদের বেশিরভাগের সমস্যা হলো আমাদের কাছে বই পড়ায় সময় দেয়ার মতো সময়ই থাকে না। “আমার বই পড়ার সময় নেই” পৃথিবীর একমাত্র অজুহাত। কিন্তু আপনিই পারেন এটি পরিবর্তন করতে। আপনাকে একটি বই পড়তে নিশ্চই পুরো মাসব্যাপী সময় দিতে হবে না?
 
এমনকি ওয়ারেন বাফেট, ইলন মাস্ক, বিল গেটস, টিম ফেরিস এর মতো সবচেয়ে ব্যস্ত এবং সফল মানুষেরাও কিন্তু পড়ার জন্য ঠিক সময় তৈরি করে নেয়। ওয়ারেন বাফেট বলেন, “আমি শুধু আমার অফিসে বসি এবং সারাদিন বই পড়ি”।
 
অসম্ভব সফল মানুষেরা অনেকেই জীবনে দীর্ঘসময় বই পরেছেন। বই পড়াকে উপভোগ করতে হবে এবং অভ্যেসে পরিণত করতে হবে, তবেই আপনি পড়ায় দক্ষ হিসেবে নির্বাচিত হবেন। জীবন কিন্তু বই পড়ার জন্য খুব ছোট। আপনি যদি অনেক বই নাও পড়তে চান তবুও এক জীবনে সব বই পড়ে শেষ করতে পারবেন না।
 
নিউ ইয়র্ক টাইমস এর বেস্ট সেলিং রাইটার টিম ফেরিস বলেন তিনি সপ্তাহে এক থেকে চারটি বই পড়েন।
 
প্রতি মিনিট শব্দ হিসেবে কত দ্রুত বই পড়েন আপনি? এ প্রসঙ্গে টিম বলেন, “তার বই পড়ার স্পীড ৮০/২০। আপনি কত ভালোভাবে (কার্যকর) বই পড়লেন তারচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আপনি কত দ্রুত (দক্ষতা) বইটি পড়লেন।”
 
 
 
কেন সপ্তাহে একটিমাত্র বই?
প্রথমত ভাবুনতো, কেন সপ্তাহে একটিমাত্র বই পড়বেন?
 
এ প্রসঙ্গে Thomas বলেন, “আরো ভালো লেখার জন্য আমি নতুন আইডিয়া উদ্ভাবন করতে থাকি এবং প্রতি সপ্তাহে সবগুলো শেয়ার করতে থাকি। আর এই চ্যালেঞ্জটি আমার বেশ পছন্দ। আমি বুঝতে পারছিলাম এটা অযৌক্তিক এবং বড় ধরনের ভার ছিল আমার জন্য। তবুও আমার খুব কাজে লাগছিল বিষয়টি। আমি আমার পছন্দের বইগুলো নির্বাচন করি। এবং সেগুলোর প্রতিটি পাতা পড়া আমার লক্ষ্য থাকে না। আমি শুধু দেখি প্রতিটি বইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আইডিয়াগুলো। আর এই আইডিয়া আমার দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য অর্জনের সুযোগ করে দেয়।”
 
 
 
আপনি কেন পড়বেন? কি পড়া উচিত? প্রথমে সেটাই খুঁজে বের করুন। আর কীভাবে পড়বেন সে বিষয়ে বলছি। অপেক্ষায় থাকুন...
 
ল্যাটিন আমেরিকার ইতিহাসে একজন প্রফেসর Michael Jimenez একদিন Bregman Partners এর CEO Peter Bregman কে বই পড়াটাকে মাথায় ঢোকানোর পরিশ্রম প্রসঙ্গে কিছু উপদেশ দিয়েছিলেন:
 
তিনি বলেন, “তোমার বই পড়ার প্রয়োজন নেই। তোমার দরকার বইয়ের কথাগুলো বোঝা।”
 
জিমেনেজ আরও বিস্তারিত আকারে বলেন, “ফিকশন চায় লেখকের নিজস্ব তৈরি ভুবনে নিয়ে যেতে, আরও বেশি কল্পনায় মগ্ন করতে। এদিকে ননফিকশন চায় আমাদের শেখাতে যা আমাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে লিডার হতে সাহায্য করবে এবং সমর্থন করবে।”
 
প্রফেসর জিমেনেজ ননফিকশন বই পড়া নিয়ে কিছু পরামর্শ দেন। Bregman’s এখানে তার নিজস্ব কিছু আইডিয়াও যুক্ত করেছে। এই পরামর্শগুলো আমাদের পড়ার জীবনে অনেক পরিবর্তন আনতে সাহায্য করবে।
 
 
 
শুরু হোক লেখক দিয়ে:
বইটি কে লিখেছে? তার বায়োগ্রাফি পড়ুন। যদি অনলাইনে আপনি তার ছোট আর্টিকেল বা সাক্ষাৎকার পেয়ে যান দ্রুত পড়ে ফেলুন। এটা আপনাকে লেখকের পক্ষপাতিত্ব এবং দৃষ্টিকোণ সম্পর্কে ভালো ধারণা দেবে।
 
 
প্রথমেই পড়ুন বইয়ের শিরোনাম, সাবটাইটেল, ফ্ল্যাপে লেখা কথা এবং সূচিপত্র:
বইটির মূল উপজীব্য কি? আপনি কীভাবে যুক্তি তর্কে জড়াবেন? হ্যা যিনি এখনো বইটি পড়েনি তার সাথে আপনার এইটুকু পড়া ধারণা নিয়ে যুক্তি তর্ক করতেই পারেন। হারবেন না আশা করি।
 
 
পড়ে নিন সূচনা ও উপসংহার:
লেখকের লেখা বিষয়বস্তুর একটা শুরু এবং শেষ থাকে। তার সেই দুটি জায়গায় লেখা প্রতিটি শব্দ খুব দ্রুত পড়ে ফেলুন। তাহলে ইতোমধ্যেই আপনি ধারণা পেয়ে যাবেন লেখক ঠিক কোনদিকে এগোতে চাচ্ছে। সূচনায় বলা হবে সেদিকে এগোনোর পরিকল্পনা নিয়ে। আর সমাপ্তিতে থাকবে এর ফলাফল কি হতে পারে তাই নিয়ে।
 
 
প্রতিটি অধ্যায় পড়ুন আলাদা করে: 
যে কোনো অধ্যায়ের শিরোনাম এবং প্রথম কয়েকটি লাইন পড়লেই বোঝা যায় লেখক তার বইয়ের মূল বিতর্কের সাথে কীভাবে সংযোগ স্থাপন করেছেন। এরপর শুধু মাত্র প্রবাহ রক্ষা করতে শিরোনাম এবং উপশিরোনাম গুলো পড়ে গেলেই চলে। প্রতিটি অনুচ্ছেদের শুরু এবং শেষ বাক্যটি পড়ার চেষ্টা করুন। যদি আপনার কাছে এর অর্থ  পরিষ্কার হয় তবে এগিয়ে যান। আর না হলে আপনি চাইলে পুরো অনুচ্ছেদ পড়ে নিতে পারেন। একবার যদি আপনি অধ্যায়টি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেয়ে যান তখন শুধু চোখ বুলিয়ে নেয়াটা আপনার জন্য সহজ হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি মূল বিষয় বস্তু সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাবেন ততক্ষণ পর্যন্ত এরকম পড়া চালিয়ে যেতে পারেন।
 
 
আবার সূচিপত্র দিয়েই শেষ করুন:
যখন বই পড়া শেষ করবেন আরেকবার ফিরে আসুন বইয়ের সূচিপত্রে। এবং পুরো বিষয়টির সারসংক্ষেপ মাথায় গেথে নিন। কিছুটা সময় নিন বই পড়ার এই প্রবাহ থেকে বেরিয়ে আসতে, যুক্তিতর্কগুলো ভালো করে চিন্তা করতে, পুরো গল্পটাকে মনে করতে আর লেখকের সাথে কাটানো এই যাত্রাটিকে উপলব্ধি করতে।
 
বই পড়াকে অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। “যখন মুড ভালো থাকবে তখন পড়বো” এমনটা হলে চলবে না। কারণ মুডের ওপর নির্ভর করাটা অনির্দিষ্ট। তাই কোথাও পাঁচ মিনিট সময় পেলেও বইয়ের পেছনে দেয়া উচিত। এক্ষেত্রে স্মার্টফোন খুব কাজের। যেখানে সেখানে যখন তখন পড়ার জন্য।
 
 
কাজে লাগুক প্রতিটি মুহুর্ত:
যে সময় হাটাচলা করছেন সে সময়টা কাজে লাগান। অথবা দুপুরের খাবার সময়টা? লাইনে দাড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার সময়টা? কি করছেন বলুনতো? আরে বই পড়ে কাটান এই সময়গুলোতে। দেখবেন ভালো লাগবে। একদিন নাহয় ছুটি দিন টেলিভিশনকে। সে সময়টি কাটুক বই পড়ে। স্বল্প সময়ের এই বই পড়ার আনন্দটুকু আপনাকে দীর্ঘমেয়াদী আনন্দ এনে দেবে।
     
Thomas Oppong বলেন, “বই আমাকে আরও উন্নত করেছে, সুখি করেছে আমাকে পূর্ণতা দিয়েছে। আমি প্রতিদিন নতুন কিছু শিখছি। এবং আমি প্রতিদিন একটু একটু করে সামনের দিকে এগুচ্ছি।”
 
সপ্তাহে একটি বই কেন পড়বেন? সফল মানুষদের এমন অভ্যেস আছে বলে? লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে তাই? না এভাবে নয়। বই পড়ুন নিজের ব্যক্তিত্ব গড়ার জন্যে। বই পড়ুন দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে। আর বই পড়ুন জীবন সম্পর্কে নতুন ধারণা পেতে।
 
আপনাকে সপ্তাহে একটি করে বই পড়তেই হবে এমনটি নয়। শুধু শুরুটা করুন। যা আপনার বই পড়ার অভ্যেস গড়তে কাজে লাগবে। অর্থাৎ দিনশেষে যেন বই পড়ার সময়টা নিজেই খুঁজে নিতে পারেন। প্রসারণ ঘটাতে পারেন জীবনে এবং আপনার দৃষ্টিভঙ্গিতে।
 
 
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.015902996063232