জিপিএ-৫ বিক্রির নামে ‘প্রতারণার’ অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় রাজধানীর উত্তরার ন্যাশনাল পাবলিক কলেজ ও দি ব্রিলিয়ান্ট কলেজের পাঠদান কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে ঢাকা বোর্ড। গতবছরের জুন মাসে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের সাবেক উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অদ্বৈত কুমার রায়, ন্যাশনাল পাবলিক কলেজ ও দি ব্রিলিয়ান্ট কলেজে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে জিপিএ-৫ বিক্রির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ তদন্তে গঠিত কমিটি এ কলেজ দুটির বিরুদ্ধে ওঠা জিপিএ-৫ বিক্রির নামে ‘প্রতারণার’ অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় কলেজ দুটির পাঠদান কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (২০ মে) ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে পাঠদান কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা বিষয়টি জানিয়ে ন্যাশনাল পাবলিক কলেজ ও দি ব্রিলিয়ান্ট কলেজের অধ্যক্ষকে চিঠি পাঠানো হয়।
ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, টাকার বিনিময়ে জিপিএ-৫ বিক্রির বিষয়ে প্রতারণার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে উত্তরার ন্যাশনাল পাবলিক কলেজ ও দি ব্রিলিয়ান্ট কলেজের পাঠদান কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হল।
ঢাকা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা দৈনিকশিক্ষাকে জানান, গতবছরের জুন মাসে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের সাবেক উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অদ্বৈত কুমার রায়, ন্যা্শনাল পাবলিক কলেজ ও দি ব্রিলিয়ান্ট কলেজের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে জিপিএ-৫ বিক্রির অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি দৈনিক শিক্ষাসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়।
জানা যায়, দি ব্রিলিয়ান্ট কলেজ জমি ও নিজস্ব ভবনের শর্ত পূরণেও ব্যার্থ হয়েছে। আর ন্যাশনাল কলেজের বিরুদ্ধে রয়েছে অভিযোগের পাহাড়। তদন্ত কমিটিকে ন্যাশনাল কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের নিয়োগপত্র দেখাতে পারেনি। কলেজে কোন ল্যাবরেটরী ও গ্রন্থাগার নেই। কথিত চেয়ারাম্যান আব্দুল মতিনের স্ত্রী কলেজের শিক্ষক পরিচয় দিলেও সে বিষয়ে কোন প্রমাণ নেই কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে। কলেজে কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী না থাকলেও ফরম পূরণ ও টিসি প্রদানে অতিরিক্ত টাকা নেয়াসহ বোর্ডের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ রয়েছে ন্যাশনাল কলেজের বিরুদ্ধে।
তবে, জিপিএ-৫ বিক্রি চক্রের মূল হোতা ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের সাবেক উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অদ্বৈত কুমার রায়কে গতবছরই ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজে বদলি করা হয়। সেখানে তিনি ক্লাস করিয়ে নায়েমে চারমাসব্যাপী প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে সম্প্রতি বিদেশে পাড়ি জমান। অদ্বৈতর বিরুদ্ধে কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
উল্লেখ্য, গতবছর জিপিএ ফাইভ বিক্রির অভিযোগ বিষয়ে দৈনিক শিক্ষায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের তৎকালীন সচিব ও বর্তমানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজও প্রশাসন) অধ্যাপক মো: শাহেদুল খবির চৌধুরী।