খোলা বাজারে চলছে সার্টিফিকেট বিক্রি। কখনো এসএসসির, কখনো এইচএসসির। আবার কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের। সব ধরনের সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। শুধু সার্টিফিকেরট জন্য দিতে হবে নগদ টাকা। রাজশাহীর পুঠিয়ায় ভাই ভাই কম্পিউটার অ্যান্ড ফটোস্ট্যাট নামের একটি দোকানে এমন কার্যক্রম চলে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভাই ভাই কম্পিউটার অ্যান্ড ফটোস্ট্যাট দোকানটিতে (কর্মচারী হিসেবে) দীর্ঘদিন ধরে জুয়েল রানা (৩০) নামের এক ব্যক্তি ভুয়া শিক্ষা সনদ তৈরি করে বিক্রি করে আসছেন। হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমানের টাকাও। ভুয়া শিক্ষা সনদে নাকি চাকরিও হয়েছে অনেকের। কেউ কেউ ছিটকে গেছে তদন্তে। তবে, ভুয়া শিক্ষা সনদ বিক্রি ব্যবসা বেশ রমরমাই চলে দোকানটিতে।
ভুয়া শিক্ষা সনদ বিক্রি অভিযোগে জুয়েল রানাকে আটক করা হয়। পরে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। জুয়েল রানা উপজেলার পৌর এলাকার কৃঞ্চপুর মহল্লার বাসিন্দা মমিনের ছেলে। সে ওই দোকানের কম্পিউটার অপারেটরের কাজ করেন। আজ শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সকালে দৈনিক শিক্ষাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, পুঠিয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওলিউজ্জামান।
অভিযোগ প্রমাণিত হলেও জরিমানার বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওলিউজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অভিযোগ ঠিক আছে। তাকে হাতেনাতে ধরা যায়নি। এ ছাড়া তার কম্পিউটারে তল্লাশি চালানো হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন শিক্ষা সনদ, ভাতার কার্ড, চাকরির আবেদনের জন্য সার্টিফিকের নাম ও বয়স পরিবর্তন ইত্যাদি কাজের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। তাই তাকে এই জরিমানা করা হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে উপজেলা সদরে অবস্থিত কম্পিউটারের দোকানে জুয়েল রানা এক নারীর জন্য এসএসসির একটি ভুয়া সার্টিফিকেট প্রস্তুত করছিলেন। এ সময় তাকে হাতেনাতে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে দোকান ঘর ও কম্পিউটার তল্লাশি করে ভুয়া শিক্ষা সনদ, জন্ম সনদ ও ভোটার আইডি কার্ড তৈরির কয়েকটি আলামত উদ্ধার করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের জিজ্ঞাসাবাদে জুয়েল রানা জানায়, এক জনের যে কোনো সার্টিফিকেট স্ক্যান করে সেটি কম্পিউটারের মাধ্যমে এডিট করে হুবুহু আরেকজনের নামে নকল সার্টিফিকেট বানিয়ে সেগুলো বিক্রি করে আসছিলেন তারা। সেখানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রায় সব শিক্ষা বোর্ডের সার্টিফিকেট প্রস্তুত করা হতো। কম্পিউটারে প্রিন্ট দেয়া এসব ভুয়া সার্টিফিকেট কিনে নিয়ে অনেকে এগুলো ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করে থাকেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওলিউজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ভুয়া সনদসহ কম্পিউটারটি আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। তবে কম্পিউটারটি ফরমেট করে তাকে ফেরত দেয়া হবে। এ ছাড়া এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে সব কম্পিউটার অপারেটরদের সর্তক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।