ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনায় অর্ধকোটি টাকার অনিয়ম - দৈনিকশিক্ষা

ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনায় অর্ধকোটি টাকার অনিয়ম

ঝিনাইগাতী(শেরপুর) প্রতিনিধি |

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ১০১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ডিজিটাল হাজিরা মেশিন (বায়োমেট্রিক) ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে স্লিপ প্রকল্পের আওতায় পাওয়া টাকা দিয়ে চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে হাজিরা মেশিনসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ ক্রয় করতে বলা হয়েছিল। উপকরণ ক্রয় শেষে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার (এটিও) প্রত্যয়ন দেখে বিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে এ টাকা পাঠানোর কথা। অথচ বায়োমেট্রিক মেশিন ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ না কিনে ভুয়া-বিল ভাউচারে বিদ্যালয়গুলোর অ্যাকাউন্টে অর্ধকোটির বেশি টাকা পাঠিয়েছে ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। তবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, জুন ক্লোজিংয়ের জন্যে ভাউচারের মাধ্যমে কেনাকাটা বা সমন্বয় দেখিয়ে এ টাকা পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। যদিও বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) পর্যন্ত উপজেলার ১০০টি স্কুলে ছিলো না ডিজিটাল হাজিরা মেশিনের অস্তিত্ব।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থ-বছরে উপজেলার ১০১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য স্লিপ প্রকল্পের (স্কুল লেভেল ইম্প্রুভমেন্ট প্ল্যান) আওতায় ৫৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বিবেচনা করে ২৬টি বিদ্যালয়ে ৭০ হাজার ও ৭৫টি বিদ্যালয়ে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। মন্ত্রালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী এ বরাদ্দের টাকা থেকে প্রতিটি স্কুলে শিক্ষকদের জন্য বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন কেনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল।
 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রয়োজনীয় উপকরণ কেনার আগেই ভুয়া-বিল ভাউচার দেখিয়ে স্লিপ প্রকল্পের টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। বেশির ভাগ বিল-ভাউচারে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন (বায়োমেট্রিক) কিনা, বিদ্যালয় ভবনের রংয়ের কাজ, ফ্যান মেরামতসহ অন্যান্য বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে। হাজিরা মেশিন কেনা হয়েছে বলে কাগজ-কলমে ব্যয় দেখানো হলেও বাস্তবে তা কেনা হয়নি। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) পর্যন্ত চেঙ্গুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক মেশিন কিনা ছাড়া বাকি ১০০ বিদ্যালয়ে এ মেশিন এখনও কেনা হয়নি।

বাকাকুড়া আদর্শ গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, স্লিপ প্রকল্পের ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। হাজিরা মেশিন ছাড়া ইতিমধ্যেই অন্যান্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ কেনা হয়েছে। এসময় হাজিরা মেশিন বাবদ ২৫ হাজার টাকার ভুয়া-বিল ভাউচার জমার কথা স্বীকার করেছেন তিনি।  

ফরিদ মাহমুদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মমিনুল ইসলাম দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, আমার স্কুলের অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৫ জুলাই স্লিপ প্রকল্পের ৭০ হাজার টাকা তুলে হাজিরা মেশিন কেনা ছাড়া অন্যান্য কাজ শেষ করেছি। তবে, হাজিরা মেশিন কিনার ২০ হাজার টাকার বিল ভাউচার জমা শিক্ষা অফিসে দিয়েছেন তিনি।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাখখারুল ইসলাম ভুয়া-বিল ভাউচারে বিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করে দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, ভাউচারের মাধ্যমে কেনাকাটা বা সমন্বয় করা শুধু এখানেই না, অন্যান্য জায়গাতেও হয়েছে। তবে সব স্কুলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই হাজিরা মেশিন কিনা হয়ে যাবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

তবে, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া করা হবে।

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.007882833480835