আগামী বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশে একযোগে শুরু হচ্ছে অষ্টম শ্রেণির 'জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট' (জেএসসি) ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের 'জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট' (জেডিসি) পরীক্ষা। নকলমুক্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে গত রোববার থেকে সারাদেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেও বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও নতুন কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবার। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সোমবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে তার মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য বিশ্নেষণ করে দেখা গেছে, যারা এবার জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় বসছে, তাদের এ ব্যাচ থেকে গত তিন বছরে ঝরে পড়েছে পৌনে চার লাখ শিক্ষার্থী। তিন বছর আগে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে সফলতার সঙ্গে তারা প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়েছিল। কিন্তু অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা শেষ করার আগেই গত তিন বছরের মধ্যে বিভিন্ন সময় তারা ঝরে পড়েছে।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী ১ নভেম্বর শুরু হতে যাওয়া চলতি বছরের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় সব মিলিয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৬ লাখ ৭০ হাজার ৩৩৩ জন।
অথচ, ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় এই ব্যাচ থেকেই পাস করেছিল ৩০ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৪ জন শিক্ষার্থী। অর্থাৎ প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আগেই ঝরে পড়েছে তিন লাখ ৭৮ হাজার ২১১ জন শিক্ষার্থী।
নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, জেএসসিতে এবার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২২ লাখ ৬৭ হাজার ৩৪৩ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ১০ লাখ ৪৩ হাজার ৭৫২ ও ছাত্রী ১২ লাখ ২৩ হাজার ৫৯১ জন। অন্যদিকে জেডিসিতে এবার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ লাখ ২ হাজার ৯৯০ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র এক লাখ ৭৯ হাজার ৯৮০ ও ছাত্রী দুই লাখ ২৩ হাজার ১০ জন। এবার গতবারের চেয়ে পরীক্ষার্থী বেড়েছে মোট ২ লাখ ১ হাজার ৫১৩ জন।
মন্ত্রী বলেন, সব ধরনের কোচিং সেন্টার অবৈধ। তাই জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার সময় সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। কেউ যদি এ সময় কোচিং সেন্টার খোলা রাখে, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, দেশের গরিব শিক্ষার্থীরা যারা পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবে না, তাদের কথা চিন্তা করে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা চালু করা হয়। এই সার্টিফিকেট নিয়ে অনেকে বিভিন্ন স্থানে চাকরির সুযোগ পাচ্ছে। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে এসসি-জেডিসি পরীক্ষা শুরু হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) ড. মোল্লা জালাল উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) অরুণা বিশ্বাস, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মাহমুদুল হক, অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি) অশোক কুমার বিশ্বাস, ঢাকা শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু, জিয়াউল হকসহ বিভিন্ন বোর্ড চেয়ারম্যান ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।