বলাৎকারের অভিযোগে তিন বছরের বেশি সময় ধরে বরখাস্ত থাকা দক্ষিণ বনশ্রী মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন শিক্ষককে চাকরিতে পুনর্বহাল ও নিয়মিত বেতন ভাতা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এছাড়া কলেজটির সভাপতি আওয়ামী লীগের সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরীর স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ মো. সিদ্দিকুর রহমান শামীমকেও চাকরিতে পুনর্বহাল করার তদবির শুরু হয়েছে। দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে এ তথ্য জানা যায়।
জানা যায়, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে স্কুলটির ৮ম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রকে বাসায় ডেকে নিয়ে বলাৎকারের অভিযোগ ওঠে সহকারী শিক্ষক মো. জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। অভিভাবকদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করেন ওই সময়ের অধ্যক্ষ মো. সিদ্দিকুর রহমান শামীম। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের আগস্টে অভিযোগ ওঠার পর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর পর্যন্ত স্কুলে আসেননি ব্যাচেলর শিক্ষক জাকির হোসেন। কিন্তু হঠাৎ করেই গত বছরের অক্টোবর মাসে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অভিযুক্ত জাকির হোসেন কাজে যোগদান ও পুরো সময়ের বকেয়া বেতন-ভাতার টাকা ৭ দিনের মধ্যে পরিশোধ করার নির্দেশ দেন। এতে অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার কমিশনে এবং আইন ও শালিশ কেন্দ্রে অভিযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কয়েকজন অভিভাবক। জাকির হোসেনের মতামত জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
এদিকে, অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া ও দুই বছর যাবত বরখাস্ত থাকা অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান শামীমও চাকরি ফিরে পাওয়ার জোর তদবির করছেন বলে জানা যায়। তাকে গত কয়েকদিন যাবত ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শকের কক্ষের সামনে দেখা গেছে।
সিদ্দিকুর রহমান শামীমের অভিজ্ঞতায় ঘাটতি থাকা ও নিয়োগ বোর্ডে কোরাম পূর্ণ না হওয়ার ঘটনা ধরা পড়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক গৌর মন্ডলের তদন্তে। দক্ষিণ বনশ্রী মডেল কলেজে যোগদানের আগে সিদ্দিকুর রহমান ছয় বছর একটি এনজিওতে চাকরি করেছেন। কিন্তু এসব তথ্য গোপন রেখে তাকে এমপিওভুক্ত করায় শিক্ষা ভবনের একটি দালাল চক্র। সব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে তাকে বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু তার একজন নিকটাত্মীয় আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেত্রী রয়েছেন, যিনি শিক্ষা বোর্ড ও অধিদপ্তরের ঘোরাঘুরি করে শামীমকে পুনর্বহাল করার চেষ্টা করছেন।