ধারাবাহিক ও ব্যবহারিক মূল্যায়ন - দৈনিকশিক্ষা

ধারাবাহিক ও ব্যবহারিক মূল্যায়ন

এম জয়নুল আবেদীন |

২০১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিদ্যালয়ে জেএসসি ও এসএসসি পর্যায়ে মোট ৫টি বিষয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়নের জন্য এনসিটিবি ও বোর্ড কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তা যথাযথভাবে মানা হচ্ছে কি না তা দেখার যেন কেউ নেই। এমনকী কোনো কোনো বিদ্যালয় এ বিষয়গুলো ক্লাস রুটিনের অন্তর্ভুক্তও করছে না। শুধু বোর্ডে নম্বর পাঠানোর সময় দায়সারাভাবে সব শিক্ষার্থীকে এ প্লাস নম্বর দিয়ে ভালো ফলাফলের জন্য প্রেরণ করছে। 

জেএসসির ধারাবাহিক মূল্যায়নের নম্বরপত্র কেন্দ্রে জমা দিতে গেলাম। দেখলাম কেন্দ্র থেকে অনলাইনে নম্বর এন্ট্রি করে বোর্ডে পাঠানো হচ্ছে কোনো এক বিদ্যালয়ের, সেখানে লক্ষ করলাম ওই বিদ্যালয়ে সবাই ৫০ এ ৫০ পেয়েছে। দেখে বিস্মিত হলাম এ কী করে সম্ভব? সবাই কি ৫০ পাওয়ার যোগ্য? আমার প্রতিষ্ঠানে প্রকৃতপক্ষে যে যা পেয়েছে তাই জমা দিয়েছি। তাহলে শিক্ষার্থীদের প্রতি কি অবিচার করলাম?

আমি একটি প্রতিষ্ঠানের ক্যারিয়ার শিক্ষা ধারাবাহিক মূল্যায়নের দায়িত্বে ছিলাম। পরীক্ষার আগে পর্যন্ত নিয়মতান্ত্রিকভাবে মূল্যায়ন ও প্রাপ্ত নম্বর সংরক্ষণ করেছি। বোর্ডে প্রেরণের আগে নম্বর শিট যখন প্রতিষ্ঠানপ্রধানকে দেখাতে ও সিন নেওয়ার জন্য গেলাম, তখন তিনি যে শিক্ষার্থীরা এ প্লাস পায়নি তাদের নম্বর কেটে এ প্লাস করে দিলেন। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শুধু এ প্লাসই নয় বরং সর্বোচ্চ নম্বর দেওয়া হলো। জিজ্ঞাসা করলাম, স্যার তাহলে সারা বছর যে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা হলো তার কী হবে? তিনি উত্তরে বললেন, আপনার কারণে ছাত্ররা কি এ প্লাস মিস করবে? অথচ এ বিষয়ের নম্বর বা গ্রেড শিক্ষার্থীর ফলাফলে কোনো প্রভাব ফেলবে না। যদিও ফলাফলে ভূমিকা রাখত তথাপি এভাবে নম্বর দেওয়া উচিত নয়। আইসিটির ক্ষেত্রেও তিনি একইভাবে নম্বর পরিবর্তন করলেন।

এবার আসা যাক ব্যবহারিক মূল্যায়নে। আইসিটি বিদ্যালয়েও বাকি বিষয়গুলোর ব্যবহারিক পরীক্ষা কেন্দ্রে অনুুষ্ঠিত হয়। স্বনামধন্য স্কুলের এক শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করলাম, স্যার আপনারা ব্যবহারিক পরীক্ষায় কেমন নম্বর দেন? (ওই প্রতিষ্ঠান প্রতি বছর বোর্ড পরীক্ষায় প্রথম থেকে তৃতীয় স্থানের মধ্যে অবস্থান করে) কীভাবে মূল্যায়ন করেন? সংকোচ ছাড়াই বলে ফেললেন কিছু পারলেও ২৫ এ ২৫, না পারলেও ২৫। আমার প্রতিষ্ঠানের এক ম্যাডাম বহিঃপরীক্ষক হিসেবে ব্যবহারিক পরীক্ষা নিতে গিয়েছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞেসা করলাম, কেমন নম্বর পেল ছাত্রছাত্রীরা? দুইজনকে ২৪ আর বাকি প্রায় ৩৫০ জনকে ২৫ দেওয়া হয়েছে। এ হচ্ছে ধারাবাহিক ও ব্যবহারিক মূল্যায়নের অবস্থা। অনেক প্রতিষ্ঠান ও কেন্দ্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করে দেখেছি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে এভাবেই মূল্যায়ন করা হয়। তাহলে বিচার করেন শিক্ষার বর্তমান অবস্থা কী? কেবলই এ প্লাস পাওয়া। কর্তৃপক্ষ ও সচেতন মহল একটু ভেবে দেখবেন।

শিক্ষক, কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বগুড়া

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061819553375244