সারাদেশে এক সঙ্গে ২৭১টি কলেজ সরকারিকরণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিবাদন ও গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এর ফলে দেশের উচ্চশিক্ষার গুণগত মানের আমূল পরিবর্তন হবে বলে দেশবাসী আশা করে। শিক্ষকেরা হচ্ছেন জাতি গঠনের কারিগর। ২৭১টি কলেজ সরকারি হওয়ার পর পত্রিকাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে যে, ননএমপিও ও অনার্সের শিক্ষকসহ কোনো শিক্ষক-কর্মচারীকেই কলেজ থেকে কোন বেতন, বোনাস দেওয়া যাবে না এবং ইউএনও ও অধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষরে আর্থিক খাত পরিচালিত হবে। যদি তা-ই হয় তবে আমাদের কিছু কথা রয়েছে। ননএমপিও ও অনার্সের শিক্ষকরা এমপিওভূক্ত না হওয়ায় সরকারের কাছ থেকে কোনো আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন না। সরকারি হওয়ার পর যদি তারা কলেজ থেকে যে ন্যূনতম আর্থিক সুবিধা পেতেন তা যদি বন্ধ করে দেয়া হয়, তাহলে পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা কীভাবে দিনাতিপাত করবেন? নুন আনতে যাদের পান্তা ফুরায় তাদের কলেজ থেকে দেয়া ন্যূনতম আর্থিক সুবিধা সরকারি বেতন-ভাতা পাওয়ার আগ পর্যন্ত অব্যাহত না রাখলে ননএমপিও ও অনার্সের শিক্ষকদের প্রতি অমানবিক আচরণ করা হবে।
সরকারি বেতন থেকে কর্তন করে নেয়ার শর্ত হলেও তাদের কলেজ থেকে দেয়া ন্যূনতম আর্থিক সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের উদারতা কামনা করছি। সেই সঙ্গে আরেকটি বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি তা হচ্ছে সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়গণই কলেজের আয়-ব্যয় কর্মকর্তা হিসাবে এ যাবৎ কাজ করে চলেছেন। কাজেই কলেজ সরকারি হওয়ার পরপর ইউএনও বা অন্য কোনো সরকারি কর্মকর্তা ও অধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষরে কলেজের আর্থিক খাত পরিচালিত হওয়ার নিয়ম চালু করলে তা হবে অধ্যক্ষ মহোদয়দের অপমানের শামিল।
কারণ, ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়গণ চতুর্থ গ্রেডের কর্মকর্তা। আশা করি, সরকার অধ্যক্ষ মহোদয়দের আয়-ব্যয় ক্ষমতা দিয়ে তাদের একক স্বাক্ষরে পূর্বের সরকারি হওয়া কলেজের মত আর্থিক খাত পরিচালনার ব্যবস্থা করবেন।
লেখক : অধ্যক্ষ, সরকারি ডাঃ জহুরুল কামাল ডিগ্রি কলেজ, দুলাই, সুজানগর, পাবনা।