সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন তিন চিকিৎসক ও এক নার্স। তারা হলেন নুসরাতের মৃত্যুকালীন জবানবন্দি গ্রহণকারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান ডা. ওবায়দুল হক, ময়নাতদন্তকারী ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ, বার্ন ইউনিটের সহযোগী অধ্যাপক মনিরুজ্জামান ও সিনিয়র স্টাফ নার্স অর্চনা পাল। এরপর তাদের জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন নান্নু ও কামরুল হাসান।
গতকাল বৃহস্পতিবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে মামলার ১৬ আসামিকে হাজির করে পুলিশ। পরে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য পিপি হাফেজ আহাম্মদ প্রথমে ডা. সোহেল মাহমুদকে আদালতে সাক্ষীর কাঠগড়ায় হাজির করেন। তিনি আদালতকে জানান, গত ১১ এপ্রিল বর্তমান পদে কর্মরত থাকার সময় তিনি, ডা. প্রদীপ বিশ্বাস ও জান্নাতুল ফেরদৌসের সমন্বয়ে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড পুলিশ কনস্টেবল রমজান আলীর উপস্থাপনমতে নুসরাতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে এবং প্রতিবেদন প্রস্তুত করে।
আদালতে তিনি প্রতিবেদন ও তার স্বাক্ষর শনাক্ত করেন। এরপর সাক্ষ্য প্রদান করেন নুসরাতের মৃত্যুকালীন জবানবন্দি গ্রহণকারী ডা. ওবায়দুল হক। তিনি জানান, গত ৬ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি নুসরাতের মৃত্যুকালীন জবানবন্দি গ্রহণ করেন। জবানবন্দি তিনি তার নিজ হাতে লিপিবদ্ধ করেন। অপর ডা. মনিরুজ্জামান ও স্টাফ নার্স অর্চনা পালের উপস্থিতিতে ভিকটিম জবানবন্দিতে টিপসই প্রদান করেন। পরে পর্যায়ক্রমে অপর দুই সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। পিপি হাফেজ আহাম্মদ ও বাদীপক্ষের আইনজীবী সাহজাহান সাজু জানান, ১৮ আগস্ট সাক্ষী চট্টগ্রাম সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হস্তরেখা বিশারদ সামছুল আলমকে হাজির রাখার আদেশ দিয়ে আদালত মুলতবি করেন বিচারক।
সোনাগাজীতে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার :এদিকে, নুসরাতকে যৌন হয়রানির ঘটনায় তার মায়ের মামলা দায়েরের পর ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি পি কে এম এনামুল করিমের অবহেলা তদন্ত করতে বুধবার বিকেলে সোনাগাজীতে আসেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. হাবিবুর রহমান। তিনি নুসরাতের বাবা এ কে এম মুছা, মা শিরিন আক্তার ও বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের লিখিত জবানবন্দি গ্রহণ করেন। পরে তিনি মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. হোছাইনসহ শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন।