গাজীপুরের সদরে পরীক্ষা হলে না দেখানোর রেশ ধরে পরিকল্পিতভাবে বাসা থেকে ছাত্রদের ডেকে নিয়ে কুপিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটেছে। এতে মেহেদী হাসান জাকির (১৬), শাহরিয়ার আহমেদ মৃদুল (১৭), আহমেদ শরীফ (১৭), মাঈনুল ইসলাম শুভ (১৭) এবং সুজন (১৮) নামের অন্তত ৫ জন ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছেন। তারা সবাই এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। জয়দেবপুর থানাধীন হুগিরগোপা স্কুল সংলগ্ন পুকুরপাড়ে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার পর এ ঘটনা ঘটে।
আহত ছাত্ররা বলেন, 'ওমর নামের এক ছেলে আমাদের সাথে পড়ত। ওই টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করার পর স্কুল থেকে স্যারেরা বের করে দিয়েছে। পরে সে অন্য স্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। গতকাল পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ওদের এলাকায় আমাদেরকে সব বন্ধুদের ঘুরতে যেতে বলে। পরে ওমরসহ বন্ধুরা মিলে ওই এলাকায় ঘুরতে যাই। ঘুরাঘুরি ও কথাবার্তার একপর্যায়ে হঠাৎ ২৫/৩০ জন ছেলে ছুরি -চাপাতি, লোহার রড, লাঠি-সোটা নিয়ে আমাদের বন্ধুদের উপর পিছন দিক থেকে অতর্কিত হামলা চালায়।'
তারা আরো বলেন, 'পরে জানতে পারি, ওমরের অভিযোগ, পরীক্ষার হলে আমরা তাকে দেখাই নাই। যার জন্য ওমর ফেল করেছে। আর এরই রেশ ধরে ওমর লোকজন নিয়ে আমাদের বন্ধুদের কুপিয়েছে।
আহত মৃদুল বলেন, 'চাপাতি ও লাঠিসোটা দিয়ে ওমর, নাহিদ ও ওদের লোকজন আমাদের বন্ধুদের মারধর করেছে। এ সময় আমাকে চাপাতি দিয়ে মাথায় কোপ মারে এবং লাঠি দিয়ে রানের মাঝে পিটিয়ে জখম করেছে।'
আহমেদ শরিফ বলেন, 'আমরা সবাই পাস করছি, আর ওমর ফেল করছে। এ কারণে ওর মাঝে আগে থেকেই ক্ষোভ ছিল। তাই আমাদেরকে ডেকে নিয়ে মারধর করেছে, কুপিয়েছে।'
তিনি আরো বলেন, 'আমরা ৫ জন ছুরি- চাপাতির কোপে আহত হয়েছি। আমার পিঠেও চাপাতি দিয়ে কোপ দিয়েছে। এছাড়াও আরো ৪/৫ জনকে লাঠি সোটা দিয়ে পিটিয়েছে।'
সাইফুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, 'আমরা ওই এলাকায় ওমরের দাওয়াতে ঘুরতে গিয়েছি। তখন এক ছেলে আমার কাধে হাত দিয়ে চড় থাপ্পড় মারা শুরু করে। পরবর্তীতে আমাদের সবাইকে পিছন দিক দিয়ে চাপাতি ও লাঠি সোটা দিয়ে যে যেভাবে পারছে মারধর করা শুরু করেছে।'
তিনি বলেন, 'আমাদের বন্ধুদের চারপাশেই ওর ছুরি চাপাতিসহ ৫/৬ জন করে দলে দলে বিভক্ত ছিল। পরে সবাই একত্রিত হয়ে হামলা করে।'
এদিকে মেহেদী হাসান জাকির বলেন, 'ফেল করে আমাদের দোষ দিচ্ছে, আমরা নাকি ওকে পরীক্ষায় দেখাইনি। এর জের ধরে আমাদের বন্ধুদের ঘুরতে যাওয়ার দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা মাথায় চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছে, পিঠে ও বাম হাতে ছুরি দিয়ে জখম করেছে।
এদিকে দেলোয়ার হোসেন নামের একজন অভিভাবক জানান, 'পরীক্ষা হলে না দেখানোকে কেন্দ্র করে ছাত্রদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় জয়দেবপুর থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এর সুষ্ঠু বিচার দাবিও করেন তিনি।
এমন ঘটনায় জয়দেবপুর থানাধীন মন্ডলপাড়া ও টেকনগপাড়া এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মৃদুলের মা বলেন, 'ওমর লোকজন দিয়ে খবর পাঠিয়েছে, সাইফুল ও শরিফকে মারার জন্য ৬টা গুলিসহ একটা পিস্তল রেখে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে পাইলে খবর খারাপ আছে।
এ বিষয়ে গাজীপুর সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইমতিয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, 'অভিযোগের কপি এখনো হাতে পাইনি। হাতে পেলেই তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।