পে-স্কেলে ফাঁকির অভিযোগ: টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড ফেরত চান কর্মচারীরা - দৈনিকশিক্ষা

পে-স্কেলে ফাঁকির অভিযোগ: টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড ফেরত চান কর্মচারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

জাতীয় বেতন স্কেলে সূক্ষ্মভাবে বৈষম্যের অদৃশ্য দেয়াল তৈরি করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ তুলেছেন কর্মচারীরা। তাদের মতে, আর্থিক সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কর্মচারীদের ব্যবধান অবশ্যই থাকাটা স্বাভাবিক হলেও বাস্তবে ব্যবধানটা স্বাভাবিক পর্যায়ে নেই। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রত্যাহার করায় আরো ক্ষতি হয়েছে। 

তবে প্রধানমন্ত্রী কিংবা সরকারের প্রতি কর্মচারীদের কোনো ক্ষোভ নেই। বরং প্রধানমন্ত্রী সব শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর মুখে হাসি ফোটাতে একটি ঐতিহাসিক পে-স্কেল দিয়েছিলেন।

কিন্তু চূড়ান্তভাবে যারা ঘষামাজা করেছেন, তারা দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের প্রাপ্য অনেক ‘হক’ কেড়ে নিয়েছেন। বিশেষ করে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড না থাকায় অনেকে বিপাকে পড়েছেন। দীর্ঘদিন চাকরি করেও তারা বেতন স্কেলের কাক্সিক্ষত গ্রেডে পৌঁছাতে পারছেন না।

এ ছাড়া বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী গ্রেড সংখ্যা ২০ থেকে নামিয়ে ১৬টি করা খুবই জরুরি ছিল। কিন্তু সেটিও মানা হয়নি। ফলে সরকারি চাকরিজীবীদের কারও মূল বেতন প্রায় ৮০ হাজার টাকা, কারও গিয়ে ঠেকেছে সাড়ে ৮ হাজারে। কিন্তু বাজার তো এই ব্যবধান বিবেচনা করে না। বাজার সবার জন্য সমান।

যার খেসারত দিতে হচ্ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বড় অংশকে। এ জন্য তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের কষ্টটা অপেক্ষাকৃত বেশি। বাড়িভাড়া ও প্রভিডেন্ট ফান্ড কর্তনের পর তারা হাতে বেতন যা পান, তা দিয়ে তাদের মাস পার করা খুবই কঠিন। এমনটিই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

 তবে অন্তর্বর্তীকালীন সমাধান হিসেবে সরকার যদি মহার্ঘ ভাতা ঘোষণার পাশাপাশি পূর্বের টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বহাল করে, তাহলে কিছুটা হলেও তাদের কষ্ট লাঘব হবে। 

বেতনবৈষম্যের বিষয়ে কয়েকজন প্রশাসনিক ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (এওপিও) সাংবাদিকদের জানান, বিদ্যমান বেতন স্কেলে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল নেই। এর বিকল্প হিসেবে দেয়া হয়েছে দুটি উচ্চতর গ্রেড। যাকে অনেকে কাটছাঁট করা টাইম স্কেল মনে করেন। একই পদে কারও পদোন্নতি না হলে তিনি ১০ বছরে ১টি এবং ১৬ বছরে আরও ১টি উচ্চতর গ্রেড পাবেন।

কিন্তু কেউ যদি ইতঃপূর্বে ১টি সিলেকশন গ্রেড ও ১টি টাইম স্কেল, অথবা ২টি টাইম স্কেল পেয়ে থাকেন তাহলে তিনি এই উচ্চতর গ্রেড পাবেন না। তারা মনে করেন, এটিই গুরুত্বপূর্ণ শুভংকরের ফাঁকি। শুধু এই সিদ্ধান্তের কারণেই বেশিরভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী চরম মাশুল দিয়ে আসছেন।

তাছাড়া এখানে আরও একটি বিষয় আছে, সেটি হল- প্রতিবছর স্বাভাবিকভাবে ১টি ইনক্রিমেন্ট যুক্ত হয়ে থাকে। এতে ১০ কিংবা ১৬ বছর পর উচ্চতর গ্রেড পেয়ে তেমন একটা আর্থিক বেনিফিট পাওয়া যায় না। দেখা যায়, যখন উচ্চতর গ্রেড দেয়া হয় তখন মূল বেতন তার কাছাকাছি চলে এসেছে। তারা বলেন, ২০০৯ সালের পে-স্কেলে চাকরির ৪, ৮ ও ১২ বছর পূর্তিতে ৩টি টাইম স্কেল ছিল।

এ ছাড়া চাকরিতে যোগদানের পর প্রতিটি ধাপে প্রাপ্য পদোন্নতি বিলম্বিত হলে ফিডার পদধারী হিসেবে একটি সিলেকশন গ্রেড পাওয়া যেত। এর ফলে সাধারণ কর্মচারীরা অনেকখানি লাভবান হতে পারতেন। কিন্তু দীর্ঘদিনের এসব সুবিধার দ্বার এখন বন্ধ। তারা বলেন, আগের সুবিধা বহাল থাকলে বহু এওপিও ১০তম গ্রেড থেকে ৭ম গ্রেডে চলে যেতে পারত।

কিন্তু এখন তারা ১৬ বছর চাকরি করার পরও অষ্টম গ্রেডের ওপরে যেতে পারছেন না। এ ছাড়া প্রশাসনিক জটিলতার কারণে এওপিওরা ২২-২৪ বছর একই পদে চাকরি করার পরও পদোন্নতি পাচ্ছেন না। মূলত ক্যাডার কর্মকর্তা ছাড়াও এই পে-স্কেলে অন্যদের ভালো কিছু হয়নি। আরও সহজ করে বলা যায়, ১০ থেকে ২০তম গ্রেড পর্যন্ত যারা আছেন তারা সবাই কমবেশি সমস্যার মধ্যে আছেন।

কেননা, নিচের দিকে একজনের ইনক্রিমেন্ট বাড়ে ৪০০ টাকা। বিপরীতে ওপরে বাড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ধরনের বৈষম্যের লাগাম টেনে ধরতে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে জাতীয় বেতন গ্রেড ১০টি করা হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে একশ্রেণির দুষ্টচক্র নানা অজুহাতে বাড়িয়ে ২০টি করেছে। এখন খাতা-কলমে ২০টি থাকলেও বাস্তবে রয়েছে ২২টি।

সচিবালয়ে এমএলএসএস বা অফিস সহায়ক (চতুর্থ শ্রেণি) পদে ১৭ বছর চাকরি করার পর একজন কর্মচারী বর্তমানে জাতীয় বেতন স্কেলের ১৭তম গ্রেডে বেতন-ভাতা তুলছেন। ইনক্রিমেন্ট পেয়ে তার বর্তমান বেসিক বা মূল বেতন দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৮২০ টাকা। বাসাভাড়া, প্রভিডেন্ট ফান্ড কর্তন করে তিনি প্রতিমাসে হাতে বেতন পান ১৩ হাজার ৮৮০ টাকা।

রোজায় স্কুল: শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম, নজরদারিও ঢিলেঢালা - dainik shiksha রোজায় স্কুল: শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম, নজরদারিও ঢিলেঢালা পেনশন প্রজ্ঞাপনে উদ্বিগ্ন ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha পেনশন প্রজ্ঞাপনে উদ্বিগ্ন ঢাবি উপাচার্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গবেষণা অনুদান করমুক্ত - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গবেষণা অনুদান করমুক্ত ব্রাজিলে তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ - dainik shiksha ব্রাজিলে তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের নামে প্রতারণা, সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের নামে প্রতারণা, সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উচ্চ মাধ্যমিকের সমমান পেলো ‘হেট’ - dainik shiksha উচ্চ মাধ্যমিকের সমমান পেলো ‘হেট’ আটকের ১৩ দিন পরেও বরখাস্ত হননি অধ্যক্ষ - dainik shiksha আটকের ১৩ দিন পরেও বরখাস্ত হননি অধ্যক্ষ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0071899890899658