বিদেশে অবস্থান করলেও দেশের উন্নয়নে এনআরবি প্রকৌশলীদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বর্তমান যুগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। গবেষণার মাধ্যমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহারে যে দেশের উন্নয়ন সম্ভব তা আমরা করে দেখাতে পেরেছি। এক্ষেত্রে আপনারা (এনআরবি প্রকৌশলী) আরও যে সব চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছেন তা দূর করে দেশকে এগিয়ে নিতে আপনাদেরই ভূমিকা রাখতে হবে।’
মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এনআরবি প্রকৌশলীদের এক সম্মেলনে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী এসময় বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সরকার ক্ষমতায় আসলে দেশের মানুষ উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখে।’
তিনি বলেন, ‘সেবার মান উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকার বেসরকারি পর্যায়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, বিমান ও হেলিকপ্টার সেবা উন্মুক্ত করেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্র উন্মুক্ত করে সেবার মান বাড়াতে ও অবারিত সুযোগ সৃষ্টিতে কাজ করছে সরকার।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল প্রতিটি ঘরে পৌঁছাতে কাজ চলছে। এরই অংশ হিসেবে দেশে কম্পিউটারের ব্যবহার বেড়েছে। সাবমেরিন ক্যাবলের সংযোগ গ্রহণ করায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে। যোগাযোগ আরও সহজ হয়েছে।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘বিএনপি-জামায়াত সরকারের ভ্রান্ত নীতির কারণে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিয়ে পড়েছিল। প্রতিকূল পরিবেশ ও চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে বাংলাদেশকে প্রযুক্তিক্ষেত্রে উদীয়মান দেশের তালিকায় আনা হয়েছে।’
বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশিদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এনআরবি ব্যাংক করে দেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তি ও শিল্পখাতে বিনিয়োগের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। আপনাদের মেধা ও বিনিয়োগে বাংলাদেশ আরও সমৃদ্ধ হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে বর্তমানে আইসিটি ও ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। হাইটেক ও ডিজিটাল পার্ক স্থাপন করা হয়েছে। দেশের সন্তানরা সেখানে ভালো কাজ করছে। এছাড়া অনলাইন মার্কেট প্লেসের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় বিভিন্ন পণ্য ক্রয়-বিক্রয়সহ কুরবানির প্রাণীও এখন অনলাইনে বেচা-কেনা করা যাচ্ছে।’
মোবাইলফোনের ব্যবহার উন্মুক্ত করায় এর ব্যবহারকারী বেড়েছে। এর ফলে স্বাক্ষরতার হারও বাড়ছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শহর ভিত্তিক উন্নয়ন নয়, বরং প্রতিটি গ্রামে উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছে। এনআরবি প্রকৌশলীদের নিজ নিজ গ্রাম ও অঞ্চলের উন্নয়নে এগিয়ে আসতে হবে। এলাকা ভিত্তিক শিল্প স্থাপন থেকে শুরু করে বিভিন্ন উদ্যোগকে সহায়তা দিতে সরকার তাদের পাশে থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের কোন এলাকায় কোন ধরনের উন্নয়ন দরকার, কি কি প্রয়োজন তা নিয়ে কাজ চলছে। উন্নয়নের জন্য বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। বিতরণ লাইন বাড়ানো হচ্ছে। সোলার প্যানেলের ব্যবহার বেড়েছে। এছাড়া সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে স্বন্দ্বীপের মতো এলাকাতেও বিদ্যুৎ পৌঁছানো হচ্ছে।’
দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মাসেতুর নির্মাণে কাজ চলছে। কর্ণফুলি টানেল নির্মাণও শুরু হয়েছে। ঢাকার সঙ্গে সিলেট-চট্টগ্রাম-দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নেও কাজ চলছে। সড়ক ও রেল যোগাযোগ আরও সহজ, দ্রুত ও আরামদায়ক করতে কাজ এগিয়ে চলেছে। এছাড়া চট্টগ্রাম ও সিলেটকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করা হয়েছে। কক্সবাজারকেও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়তে কাজ এগিয়ে চলেছে।’
তিনি আরও বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার কাজ করছে। এর মধ্য দিয়ে এসডিজি গোল বাস্তবায়ন করা হবে।