প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেছেন, বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধিসহ প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদায় উন্নত করেছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয় ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, আইসিটি ক্লাস রুম, প্রাক প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ, দপ্তরি কাম প্রহরী নিয়োগসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সাধন করছে সরকার। আগামী দিনে প্রাথমিক শিক্ষকদের কোনো দাবি বতর্মান সরকার অপূর্ণ রাখবে না। রোববার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক থেকেই প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে শতকরা ৮০ শতাংশ পদোন্নতি পাবেন। বাকি ২০ শতাংশ সরাসরি নিয়োগ দেয়া হবে। এ বিষয় নিয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো সরকার প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে মন দেয়নি। সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের গ্রেডের পরিবর্তনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ সময় প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণের ঘোষণা দিয়ে প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, প্রাথমিক শিক্ষকরা হচ্ছেন ‘ফাউন্ডার টিচার’। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে শিক্ষকদেরও কাজে ডিজিটাল হওয়ার আহ্বান জানান। শিক্ষক যেমন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষকদের ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক। শিক্ষকদের সকল দাবি-দাওয়া নিয়ে ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে অচিরেই এসব দাবি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হবে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম তোতা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, সংসদ সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন, প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী সুরাইয়া সুলতানা।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন আহম্মেদ, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সমিতির সভাপতি মো. মোফাজ্জল হোসেন, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের আহ্বায়ক এবং দৈনিক শিক্ষার সম্পাদকীয় উপদেষ্টা মো. সিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গাজীউল হক চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর কাছে বেশ কিছু দাবি দাওয়া তুলে ধরা হয়। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১ তম গ্রেডে নির্ধারণ, প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড প্রদানসহ সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত ও পদোন্নতি প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের বেতনের সমতা আনয়ন, পদোন্নতি প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের পূর্বে প্রাপ্ত টাইমস্কেল প্রদান, সারাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহের অভিন্ন কর্মঘণ্টা ও শিশু বান্ধব সময়সূচি চালুকরণ, প্রতিটি বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর সরবরাহ, প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদ সংখ্যা বৃদ্ধি করে শিক্ষক স্বল্পতা নিরসনসহ একজন করে অফিস সহকারী কাম হিসাব রক্ষক পদ সৃষ্টি, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণসহ জাতীয় শিক্ষানীতির পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।