শিক্ষার ভিত মজবুত না হলে একজন শিক্ষার্থী পরবর্তী সময়ে কতটা দক্ষতা অর্জন করতে পারবে এ নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। তাই একজন শিক্ষার্থী যাতে প্রাথমিক পর্যায়ে যথাযথ শিক্ষা পায় এ জন্য সবাই সতর্ক থাকে। শিক্ষার্থীর শিক্ষার ভিত কী করে মজবুত করা যায়, এ নিয়ে বিভিন্ন দেশে নানা ধরনের গবেষণা হয়েছে এবং তা অব্যাহত আছে। কাজেই এ নিয়ে নতুন করে গবেষণার আগে বিভিন্ন দেশে যেসব গবেষণা হয়েছে তা বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা করলে দ্রুত ভালো ফল পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী হওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে অল্প সময়ে কতটা ভালো ফল পাওয়া যাবে, তা অনেকটাই নির্ভর করে দক্ষ শিক্ষকের ওপর। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে যারা শিক্ষকতা করছেন তারা কতটা দক্ষ এটি এক প্রশ্ন। এসব শিক্ষক কতটা মেধাবী এটাও এক প্রশ্ন। এ পেশায় মেধাবীরা আকৃষ্ট হচ্ছে কি না এ বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। বেতন-ভাতা, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা- এসবের অভাব থাকলে এ পেশায় মেধাবীরা আকৃষ্ট হবে না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।
আমাদের দেশের প্রাথমিক পর্যায়ের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থীর একটি বড় সমস্যা হল শিক্ষা গ্রহণে অনাগ্রহ বা শিক্ষাভীতি। কোনো কোনো শিক্ষাবিদের মতে, শিক্ষাভীতির অন্যতম কারণ শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ। কাজেই এসব বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক হতে হবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা নেয়া হবে না ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে। শ্রেণিকক্ষে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর শিখনদক্ষতা মূল্যায়ন করা হবে। এ উদ্যোগের ফলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাভীতি দূর হবে, আশা করা যায়। আগামী জানুয়ারি থেকে এই কার্যক্রমের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। আমরা আশা করব, এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগ কর্মসূচির সঙ্গে যারা যুক্ত থাকবেন তারা আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন এবং দায়িত্ব পালনকালে যেসব সমস্যার মুখোমুখি হবেন, তা সঠিকভাবে চিহ্নিত করে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানাবেন।
প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রদানের পদ্ধতি ঘন ঘন পরিবর্তনের আগে পুরো বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের গভীরভাবে চিন্তা করা দরকার। যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষকের অভাবে অনেক ভালো পরিকল্পনাও সঠিকভাবে বাস্তবায়নে নানারকম সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কাজেই প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
অনন্ত অনীক : মিরপুর, ঢাকা।