অনিয়ম, অসঙ্গতি দিয়েই চলছে প্রাথমিকে বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ, ইউআরসি ও শিক্ষা অফিসের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় না থাকা এবং ডাটাবেজ না থাকা অনেকাংশেই দায়ী!
প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের মানোন্নয়নে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোকে অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার।
শিক্ষকদের মানোন্নয়নে তথা প্রাখমিক শিক্ষার উন্নয়নে বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ সহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ বিশেষ ভূমিকা রাখে। কিন্তু এই প্রশিক্ষণ কতটা ফলপ্রসু হচ্ছে? কেউ কি তা চিন্তা করে দেখেছে ? প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রমেই হ-য-ব-র-ল। নেই কোন ডাটাবেজ, নেই কোন মনিটরিং!
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য চলছে বরাবরের মত অতীতের প্লান করা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল দিয়ে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ। যেখানে ডেপুটেশন দেওয়া হয় বিভিন্ন অনিয়ম করে, একই শিক্ষক বার বার প্রশিক্ষণে আসে মনে হয় যেন তারা প্রশিক্ষিত হতে নয় বরং অর্থের জন্য আসে। অনেকই ক্ষমতার অপব্যবহার, কোটানীতি, পরিচিতির বিবেচনায় ডেপুটেশন পেয়ে থাকে যা কোন ভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। ইউআরসি ও শিক্ষা অফিসের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় না থাকা এবং ডাটাবেজ না থাকা অনেকাংশেই দায়ী। যার ফলে যারা প্রশিক্ষন পাওয়ার কথা তাঁরা প্রশিক্ষণ পায়না।
বছরে শতকরা প্রতি বছর প্রায় ৭% শিক্ষক ৫ টি বা তার বেশি বিষয়ে, ১৩% শিক্ষক ৩/৪ টি বিষয়ে, ২০% শিক্ষক ২ টি বিষয়ে এবং ৩৫%শিক্ষক ১ টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ পেয়ে থাকেন। সবমিলে প্রতি বছর শেষে প্রায় ২৫% শিক্ষক কোনো প্রশিক্ষণ পায়না। অন্যদিকে ৫% শিক্ষক সবসময় প্রশিক্ষণে থাকেন।
ফলে যাঁরা শ্রেণিতে পাঠ দেন, তাঁদের প্রশিক্ষণ কম। অন্যদিকে কিছু শিক্ষক প্রশিক্ষণে থাকার কারণে ক্লাসে সময় কম দেন।
এমনও চিত্র দেখা গেছে একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা ৫ জন, ২ জন শিক্ষক গেছেন প্রশিক্ষণে, একজন আছেন ডিপিএড প্রশিক্ষণে, এই অবস্হায় বিদ্যালয়ের কী অবস্হা হবে? সঠিক পরিকল্পনা না থাকায় এমন অবস্হা হচ্ছে।
পরিশেষে প্রত্যাশা রাখতে চাই যে, বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণগুলো হবে মানসম্মত ম্যানুয়ালে দ্বীর্ঘ মেয়াদী, যা সুনির্দিষ্ট ডাটাবেইজের মাথ্যমে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে ডেপুটেশন দেওয়া হবে।তাহলেই হবে প্রশিক্ষিত শিক্ষক, এগিয়ে যাবে প্রাথমিক শিক্ষা, দেশ পাবে উন্নত নাগরিক।
লেখক-সহকারী শিক্ষক, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।