নাটোর সদরের শেখের হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাত বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা ঝুঁকিপূর্ণ টিনশেড ভবনে চলছে পাঠদান। বিদ্যালয় কক্ষের স্বল্পতার কারণে পঞ্চম শ্রেণির ৩৯ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান হচ্ছে পরিত্যক্ত ভবনের ঝুঁকিপূর্ণ একটি কক্ষে। বর্তমানে বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি পড়ে কক্ষের ভেতর, যার ফলে শিক্ষার্থীর পাশাপাশি তাদের বইখাতাও ভিজে যায়।
দুপুর ১২টার সময় শিশু শ্রেণির ছুটি হয়ে অপর একটি কক্ষ ফাঁকা হলে পঞ্চম শ্রেণির ওই ৩৯ জন শিক্ষার্থীকে আবার বসানো হয় শিশু শ্রেণির মেঝেতে। ২৭২ জন ছাত্রছাত্রীর এ বিদ্যালয়ে বসার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় তাদের গাদাগাদি করে বসতে হয় শ্রেণিকক্ষের মেঝেতে। বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জানায়, পরিত্যক্ত ভবনে তারা ক্লাস করতে ভয় পায়। সামান্য বাতাসে যখন ভাঙাচোরা টিনের শব্দ হয় তখন তারা চমকে ওঠে এবং তাদের পাঠের প্রতি মনোযোগ থাকে না। তাছাড়া বর্তমানে বর্ষাকালে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হলে ছাত্রছাত্রী ও তাদের বইখাতা ভিজে যায়।
এছাড়া পরিত্যক্ত কক্ষে ফ্যান না থাকায় প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ক্লাস করা তাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দুপুর ১২টার পর যখন তাদের শিশু শ্রেণির মেঝেতে বসানো হয় তখন তাদের লিখতে ও পড়তে অনেক সমস্যা হয়। তারা দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের দাবি জানায়। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মু. আইয়ুব আলি বলেন, বিদ্যালয়ের বয়স ৮৪ বছর হলেও ২০০৫ সালে স্থাপিত তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি একতালা ভবন ছাড়া আর কোনো একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়নি।
সাত বছর আগে উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী যে ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন সেই অনেক পুরাতন একটি ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষে পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান করাতে হচ্ছে। যেখানে ফ্যান টানানো সম্ভব না হওয়ায় গরমের সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের খুব সমস্যা হয়। ঝড়বৃষ্টির সময় শিক্ষার্থীদের অন্য কক্ষে নিয়ে যেতে হয় যার ফলে উভয় শ্রেণির পাঠদানই বন্ধ রাখতে হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারা হাসনা বলেন, তাদের কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হচ্ছে। একাধিকবার অফিসকে এ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষা কর্মকর্তারা বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসে বিষয়টি দেখেছেন এবং তারা বলেছেন তালিকায় নাম দেয়া আছে আগামীতে ভবন হবে। কিন্তু কয়েক বছর হয়ে গেল এ ভবন আর হচ্ছে না।
তিনি কর্তৃপক্ষের কাচে দ্রুত এর সমাধান দাবি করেন। নাটোর জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। খুব তাড়াতাড়িই হয়তোবা নতুন ভবনের জন্য বরাদ্দ পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে পরিত্যক্ত ভবনে আর কোনো ক্লাস না নেয়ার জন্যও ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।