দেশের সব কলেজের মতো রাজধানীর বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজেও চলছে এইচএসসির পরীক্ষা। তবে, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের আধা কিলোমিটারের কম দূরত্বে অবস্থিত কলেজ কেন্দ্রে ব্যতিক্রমধর্মীভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এইচএসসির কেন্দ্রে ১৪৪ ধারা বজায় থাকলেও ঢুকতে বাধা দেয়া হয়নি কাউকে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল থেকে এইচএসসির অর্থনীতি ২য় পত্র পরীক্ষা চলে। অভিযোগ এসেছে, বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে প্রবেশের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। তবে কলেজটির অধ্যক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার সাথেই আমাদের ক্লাস হচ্ছে।
জানা গেছে, রাজধানীর বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজটি ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের আধা কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। এ কেন্দ্রে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সিটি কলেজের পরীক্ষার্থীরা এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে এইচএসসির অর্থনীতি ২য় পত্র পরীক্ষা শুরু হয়। কিন্তু কয়েকটি সূত্র থেকে আসা অভিযোগে জানা যায়, পরীক্ষা কেন্দ্রে ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও সকাল থেকেই বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে অবাধে যাতায়াত করছেন সবাই। কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আসছেন কেন্দ্রে। অভিযোগ উঠেছে, কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ফোন নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ ও অবস্থান করছেন। এমনকি পরীক্ষার্থীরা খোলা বই নিয়ে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে পরীক্ষা চলাকালীন দুপুর বারোটা চল্লিশ মিনিটে কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে আরা শোফালীর সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি এ সময় দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, শুধু ২৪১ রুমে অডিটরিয়ামে শুধু পরীক্ষা চলছে। কলেজের বাকি অংশে ক্লাস হচ্ছে। ২৪১ নম্বর রুমে কেউ যাচ্ছে না।
পরীক্ষা কেন্দ্রে কাউকে প্রবেশ করতে না দেয়ার নির্দেশনা জারি করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কথা স্মরণ করিয়ে দিলে অধ্যক্ষ বলেন, অডিটরিয়াম বিল্ডিংটি আলাদা। সেখানে কেউ যাচ্ছে না। পরীক্ষার্থীরা যাতে বিরক্ত না হয় সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের ছাত্রীদেরও ইনকোর্স পরীক্ষা হচ্ছে। আজকে একটি কক্ষে এইচএসসি পরীক্ষা থাকায় আমাদের ছাত্রীদেরও পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবুল বাসার দুপুর সাড়ে বারোটায় দৈনিক শিক্ষাকে জানান, বিষয়টি আমি আপনার কাছ থেকে জানতে পারলাম। খোঁজ নিয়ে দেখছি। কিছুক্ষণ পর প্রতিবেদককে টেলিফোন করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবুল বাসার জানান, ওই কেন্দ্রে আজকে একটি কক্ষে পরীক্ষা হচ্ছে। আমি অধ্যক্ষের সাথে কথা বলেছি। কলেজে অন্যান্য কাজে সবাই যাচ্ছে। পরীক্ষার রুমটি সিসি টিভি ক্যামেরার আওতাভুক্ত। সেখানে বই দেখে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে না বলে অধ্যক্ষ নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা পরিপত্রে বলা হয়, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালীন ও এর আগে বা পরে পরীক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ছাড়া অন্যদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। একই দিন জারি করা অপর এক পরিপত্রে বলা হয়, পরীক্ষায় কেন্দ্র সচিব ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অননুমোদিত মোবাইল ফোন বা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুয়ায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে।