`ছুটির ঘণ্টা’ ছায়াছবির হৃদয়বিদারক ঘটনাটি বাস্তবেও ঘটতে যাচ্ছিল সিরাজগঞ্জের সারুটিয়া নিঝুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে স্কুলের টয়লেটে গিয়েছিল পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্র। ওদিকে বেজে ওঠে ছুটির ঘণ্টা। একে একে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা স্কুল ছেড়ে বেরিয়ে যেতে থাকেন। দায়িত্বরত শিক্ষক শ্রেণিকক্ষ ও টয়লেটের দরজায় তালা লাগিয়ে দেন। কেউ জানল না ভেতরে রয়ে গেছে শিশুটি। এভাবে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা শিশুটি আটকে ছিল টয়লেটে। যখন উদ্ধার হলো ততক্ষণে শিশুটি গরমে ও আতঙ্কে ভীষণ অসুস্থ।
গত শনিবার এমন ঘটনা ঘটেছে সারুটিয়া নিঝুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আর টয়লেটে আটকে পড়া শিশুটি পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ইব্রাহিম (১১)। সে নিঝুড়ি গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। ঘটনার পর চার দিন অতিবাহিত হলেও শিশুটি এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। এদিকে একটি মহল ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য নানারকম তৎপরতা চালাচ্ছে। ওইদিন কে স্কুলের দরজায় তালা মেরেছিল, তা প্রকাশ করছে না। শিশুটির ওপর জ্বিনের আছর পড়েছে বলে মিথ্যা রটনা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, গত শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে ইব্রাহিম টয়লেটে আটকে পড়ে। বিকালে স্কুলের মাঠে গ্রামের ছেলেরা খেলতে এসে টয়লেটের ভেতরে কান্নার আওয়াজ পায়। তালা ভেঙে প্রায় অচেতন অবস্থায় ইব্রাহিমকে উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রহমতুল বারী রাসেল জানান, গরমে ও আতঙ্কে শিশুটি খুবই কাহিল হয়ে পড়েছিল, কোনো সাড়া দিচ্ছিল না। জানা গেছে, টয়লেটটি স্কুলের সীমানার ভেতরে। পাশাপাশি দুটি টয়লেট সেখানে। একটি ছেলেদের অপরটি মেয়েদের।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন মল্লিক বলেন, তিনি ওই সময় প্রাতিষ্ঠানিক কাজে বাইরে ছিলেন। খবর পেয়ে তিনি শিশুটির প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আকতারুজ্জামান জানান, প্রধান শিক্ষককে ওই ছাত্রের ভালোভাবে চিকিৎসা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সঙ্গে বারবার চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি।