জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। একটি অংশ নির্বাচনের আগে আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির অপচেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন আরেক অংশকে। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভা থেকে এ ব্যাপারে শিক্ষক সমাজকে সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে সাধারণ শিক্ষকদের আহ্বান জানানো হয়। ফেসবুকভিত্তিক সংগঠনের উদ্যোগে জাতীয়করণের দাবিতে প্রেস ক্লাবের সামনে দু’সপ্তাহ ধরে অনশনরত শিক্ষকদের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি।
১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে। ধর্মঘট ও আমরণ অনশনে থাকা শিক্ষকরা ওই পরীক্ষা না নেয়ার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করেছিলেন। তবে শনিবার পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। শিক্ষক নেতা নজরুল ইসলাম রনি বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী শিক্ষকদের দাবির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে ইতিবাচক নন বলে আমাদের জানানো হয়েছে। তবে আমাদের বিশ্বাস তাকে বোঝাতে পারলে তিনি জাতীয়করণে রাজি হবেন। তাই তার সঙ্গে আলোচনা করতে চাই। লিয়াজোঁ কমিটির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যাপারে আমরা আগ্রহ প্রকাশ করিনি। এখন ডাকের অপেক্ষায় আছি।’
তবে অনশনকারী শিক্ষক নেতারা দাবি করছেন, এখন এমপিওভুক্ত সব স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা জাতীয়করণ করা হলে সরকারের বাড়তি তেমন ব্যয় হবে না। কিন্তু এ হিসেবটি প্রধানমন্ত্রীকে যথাযথভাবে জানানো হয়নি। তাই তারা এখন প্রধানন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চান। আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে তারা আজ ঘোষণা দিতে পারেন বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম রনি বলেন, ‘একটি মহল চায় না শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবার সরকার গঠন করুক আওয়ামী লীগ। তাই তারা শিক্ষকদের দাবির যৌক্তিকতা প্রধানমন্ত্রীকে যথাযথভাবে বোঝাচ্ছেন না।’
রনি দাবি করেন, ‘বর্তমানে এমপিওভুক্ত সব প্রতিষ্ঠানে এমপিও বাবদ মাসে খরচ হচ্ছে ৯০০ কোটি টাকা। জাতীয়করণ করা হলে খরচ বাড়বে ২০০ কোটি টাকা। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে যদি তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যয় সরকারি কোষাগারে জমা নেয়া হয়, তাহলে খরচ তেমন একটা বাড়বে না। বরং সামান্য দিয়ে শিক্ষকদের সরকার অনেক খুশি করতে পারবে।’