ছেলেধরা সন্দেহে ঢাকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে তাসলিমা বেগম রেনু নামের এক নারীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দাখিল করা অভিযোগপত্র আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরী অভিযোগপত্রে ‘দেখিলাম’ লিখে স্বাক্ষর করেন।
এরপর বাদীকে নোটিস দিতে আগামী ১ অক্টোবর দিন ধার্য করেন বিচারক। আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই মাঝহারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
গত ১০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক আব্দুল হক ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের ডেসপাস শাখায় এই অভিযগপত্র জমা দেন। মোট ১৫ আসামির বিরুদ্ধে এই অভিযোগপত্র জমা পড়ে।
অভিযোগপত্রে যে ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে, তার মধ্যে দুজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোর রয়েছে। আর মো. মহিউদ্দিন (১৮) নামে একজন পলাতক।
বাকি ১২ জনের মধ্যে ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় হোসেন মোল্লাকে (২০) প্রধান আসামি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
অন্যরা হলেন- রিয়া বেগম ওরফে ময়না বেগম (২৯), আবুল কালাম আজাদ ওরফে আজাদ মন্ডল (৫০), কামাল হোসেন (৪০), মো. শাহিন (৩২), মো. বাচ্চু মিয়া (৩৬), বাপ্পী ওরফে শহিদুল ইসলাম (২১), মুরাদ মিয়া (২৬), সোহেল রানা (৩০), আসাদুল ইসলাম (২২), বিল্লাল মোল্লা (৩২) ও রাজু ওরফে রুম্মান হোসেন (২৩)।
আসামিদের মধ্যে দুইজন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আলাদা অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। আসামি মহিন উদ্দিন পলাতক। আর রিয়া বেগম, বাচ্চু মিয়া, শাহীন, মুরাদ ও বাপ্পী উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন।
আলিফ, মারুফ, সুমন ও আকলিমা নামে চারজনের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া গেলে সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে দেওয়া হবে।
পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে ‘মানুষের মাথা লাগবে’ বলে গত বছরের মাঝামাঝিতে ফেইসবুকে গুজব ছড়ানোর পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে কয়েকটি আক্রমণের ঘটনা ঘটে।
তার এর মধ্যেই ওই বছরের ২০ জুলাই ঢাকার উত্তর বাড্ডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে তসলিমা রেনুকে (৪২) পিটিয়ে মারা হয়। তিনি তার মেয়েকে ভর্তি করানোর জন্য খবর নিতে সেখানে গিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় রেনুর ভাগ্নে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু তখন অজ্ঞাত পাঁচশজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।