লালমনিরহাটে একাধিক মহাবিদ্যালয়, ডিগ্রি কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষা কার্যক্রম চলছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে। কোনো কোনো ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে; কিন্তু যোগ্য প্রার্থীর অভাবে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না। মেয়াদোত্তীর্ণ অধ্যক্ষরা হাইকোর্টে রিট করে অধ্যক্ষের দায়িত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন।
লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলায় অর্ধশতাধিক মহাবিদ্যালয়, ডিগ্রি কলেজ ও মাদরাসা রয়েছে। অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৯৯১ ও ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে বিএনপি জামাত জোট সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই সময় এলাকার ধনাঢ্য ব্যক্তি ও শিক্ষানুরাগীরা এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা নিজেদের জায়গা জমি দান করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে ছিলেন।
সেই সময় গড়ে উঠা মহাবিদ্যালয়, ডিগ্রি কলেজ ও দাখিল মাদরাসাগুলোতে প্রভাবশালীদের একক নেতৃত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে উপাধ্যক্ষর পদ সৃষ্টি করা হয়নি। অথবা উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেয়া হয়নি। কালের বিবর্তনে বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো কোনোটির বয়স প্রায় ২৫ থেকে ৩৫ বছর। অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন অধ্যক্ষ পদ শূন্য রয়েছে।
লালমনিরহাটের বড়বাড়ি মহা বিদ্যালয়, কামরুননেছা ডিগ্রি কলেজ, কালীগঞ্জের উত্তরবাংলা ডিগ্রি কলেজ, বারোঘরিয়া দাখিল মাদরাসা, মহিষখোচা ডিএম মাদরাসা, দক্ষিণ বালাপাড়া ফাজিল মাদরাসাসহ জেলার প্রায় ২৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো অধ্যক্ষ নেই। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানগুলো। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে আগের অধ্যক্ষকে দুই বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে রাখা হয়েছে। সেই চুক্তির মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে অধিকাংশের; কিন্তু এখনও অধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে পারছে না।
কামরুননেছা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল হামাত মুকুল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই প্রজ্ঞাপনে অধ্যক্ষ পদের যোগ্যতা নির্ধারণ করেছে ৩ বছরের উপাধ্যক্ষর অভিজ্ঞতা। উপাধ্যক্ষের যোগ্যতা নির্ধারণ করেছে ১২ বছর সহকারী অধ্যাপকের অভিজ্ঞতা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমানে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে যোগ্য প্রার্থী পাচ্ছে না। অথচ এই প্রজ্ঞাপনের আগে অধ্যক্ষ নিয়োগে ১২বছরের সহকারী অধ্যাপনা অথবা ১৫ বছরের প্রভাষকের অভিজ্ঞতা হলেই চলতো। তবে অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থী কোনো তৃতীয় বিভাগ থাকা চলবে না।
শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, অধ্যক্ষ নিয়োগে সহকারী অধ্যাপকের জন্য ১২ বছরের এবং প্রভাষকের ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাই যথেষ্ঠ। বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিবেচনায় নিতে পারে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।