কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, এস্টেট শাখা ও নিরাপত্তা শাখায় লোকবল সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। এসব শাখার দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করতে না পারায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারকেও পর্যাপ্ত সেবা দিতে পারছে না সংশ্নিষ্টরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর হচ্ছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের পরীক্ষা গ্রহণ, ফলাফল প্রকাশ, সার্টিফিকেট প্রদানসহ অনেক জরুরি কাজ করা হয় এখানে। গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর হওয়ার পরও এখানে মোট ১৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত।
কার্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে এখানে পর্যাপ্ত কর্মকর্তা থাকলেও মাঠপর্যায়ে কাজ করার কর্মীর খুবই অভাব। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ফলাফল প্রকাশ হয়ে গেলেও লোকবল সংকটের কারণে সার্টিফিকেট পেতে বিলম্ব হচ্ছে তাদের।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) নুরল করিম চৌধুরী জানান, আমাদের কার্যালয়ে লোকবল কম থাকায় পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দিতে পারছি না। তারপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। ডাটা প্রসেসিং করার মতো দক্ষ লোক নিয়োগ করা হলে সমস্যাগুলো কাটিয়ে ভালো সেবা দিতে পারবেন বলে মনে করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসের দুটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা এস্টেট ও নিরাপত্তা শাখা। লোকবল সংকটের কারণে দুটি শাখাই প্রায় স্থবির। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার পাচ্ছে না প্রয়োজনীয় সেবা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তর পরিস্কার রাখার মূল দায়িত্ব এস্টেট শাখার। এ শাখার অধীনে বর্তমানে ৪ জন পরিচ্ছন্নকর্মী কাজ করেন। বাকি কর্মীরা বিভিন্ন হল ও ডিন অফিসের অধীনে। এত কম পরিচ্ছন্নকর্মী দিয়ে কাজ চালানো কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। এ শাখার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে লোক নিয়োগ দিয়ে কাজ করাতে হচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও ২০ জন পরিচ্ছন্নকর্মী প্রয়োজন।
ওই শাখার কর্মকর্তা সহকারী রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে আমাদের প্রয়োজনের কথা জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে চাহিদা অনুযায়ী পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে।
অন্যদিকে ৫০ একর বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন নিরাপত্তা শাখার কর্মীরা। বর্তমানে এ শাখার অধীনে ২৬ জন প্রহরী ও ২১ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু এ সদস্যরা দিনরাত ভাগ করে নিরাপত্তা দেওয়ায় পুরো ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হয় না তাদের। ফলে সন্ধ্যার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার এলাকায় শিক্ষার্থীরা ভয়ে যাতায়াত করতে পারেন না। অনেক সময় ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটছে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায়।
একজন নিরাপত্তাকর্মী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু এলাকায় নিজেদের একা যেতেই ভয় লাগে। সেখানে শিক্ষার্থীরা কীভাবে নিরাপত্তা পাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাদেক হোসেন মজুমদার বলেন, বর্তমানে আমাদের নিরাপত্তাকর্মীর সংকট রয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে আরও কয়েকটি ভবনকে নিরাপত্তা বলয়ে আনতে হবে। চাহিদা অনুযায়ী নিরাপত্তাকর্মীর জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হবে। প্রয়োজনীয়-সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী পেলে নিরাপত্তা সংকট থাকবে না বলে মনে করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এমরান কবির চৌধুরী বলেন, একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কিছু নতুন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে সামনে আরও নিয়োগ দেওয়া হবে।