জাতীয়করণ ও এমপিওভুক্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলনকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার ষড়যন্ত্রের তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরসহ শিক্ষা প্রশাসনের সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে।
একটি সংস্থার প্রতিবেদনে জানা যায়, এমপিওভুক্তিকরণ, জাতীয়করণ, বৈশাখী ভাতা, ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধিসহ কয়েকদফা দাবিতে ভিন্ন ভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা দেয়াসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে কয়েকটি শিক্ষক-কর্মচারী সংগঠন। এদের মধ্যে জামায়াত-শিবিরপন্থী কয়েকটি শিক্ষক সংগঠন ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ খুলে শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পাশাপাশি কৌশলে সরকারবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছে। ফেসবুকভিত্তিক একটি সংগঠনের কথিত নেতৃবৃন্দ শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বাদ দিয়ে সারাদিন ফেসবুকে বিভিন্ন উসকানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনের লিংক শেয়ার ও কমেন্ট করতে ব্যস্ত থাকছেন। একটি সংগঠন আরেকটি সংগঠনের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কটূক্তি করছে, যা কোনোভাবেই শিক্ষকসুলভ আচরণ নয়। সবুজ হাসান, তাওহীদসহ কয়েকডজন ব্যক্তির নাম উল্লেখ্ করে বলা হয়, এদের ফেসবুক আইডি দিয়ে উসকানিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী পত্র-পত্রিকার প্রতিবেদন, ভিডিও ইত্যাদি ছড়ানো হয়। শিক্ষক আন্দোলনের নামে রাজনৈতিক উসকানি দেয়া কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপ নজরদারিতে রয়েছে বলে জানা যায়।
সংস্থার প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন আগামী বাজেটে এমপিওভুক্তিকরণ ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণার পরও জানুয়ায়ী মাসে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি রাজনৈতিক দলের উসকানিতে শ’খানেক শিক্ষক খেয়েদেয়ে তথাকথিত আমরণ অনশন করেছেন।”
সংস্থাটির প্রতিবেদনে সরকারের পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো সংগঠনকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তা, সচিবালয়, শহীদ মিনারসহ কোথাও সমাবেশ করতে না দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাম্প্রতিক এক চিঠিতে শিক্ষকদের আন্দোলনকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগিয়ে কোনও স্বার্থান্বেষী মহল যেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সংস্থার দেয়া চিঠির একাংশ উদ্ধৃত করে শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অগ্রায়ন করা হয়েছে।
জানা যায়, কয়েকটি ফেসবুকভিত্তিক ভুইফোঁড় সংগঠন জাতীয়করণের নামে শিক্ষা অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের কতিপয় কর্মকর্তার সঙ্গে ছবি তুলে তা নিজেদের ফেসবুক গ্রুপে দিয়ে দিচ্ছেন। আর দাবী করছেন সাক্ষাতদাতা কর্মকর্তারা তাদের দাবী মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এতে করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।