মুরাদনগর উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়নে মনোরম পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত জাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জড়িত। বিদ্যালয় ভবনের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে অদের খালের একটি শাখা। যার মধ্যে বর্ষাকালে থাকে অনেক স্রোত।
এতে করে যে কোন সময় ঘটতে পারে প্রাণহানির মতো ঘটনা। অন্যদিকে স্বাধীনতার ৪৬ বছর পার হলেও জাড্ডা গ্রামটিতে যাতায়াতে কোন সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় গ্রামটিতে শিক্ষার হার দিন দিন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, ১৯৪১ সালে ১৫ শতাংশ জমি নিয়ে ঈশা খাঁ বংশধর হোসেন আলী খাঁন বিদ্যালয়টি স্থাপন করেন। বর্তমানে শিশু শ্রেণি থেকে প্রঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৪৩৬ জন শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে। দুতলা একটি ভবন রয়েছে, এর মধ্যে ৪টি রুম থাকায় অফিস রুমসহ শ্রেণিকক্ষগুলোতে গাদাগাদি করে চলছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার কার্যক্রম। যাতে করে গরমকালে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষকের পদ ৬টি থাকলেও শিক্ষক রয়েছে ৪ জন। এছাড়া বিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়ে কোন শিক্ষক না থাকায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের লোখাপড়া। অন্যদিকে হিন্দু শিক্ষক না থাকায় হিন্দু বিষয়ের ক্লাস নিচ্ছে মুসলমান শিক্ষকরা। সরকার সবকয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে সকল বিষয়ে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও স্কুলটিতে কোন প্রকার ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর না পাওয়ায় ডিজিটাল যুগে ডিজিটাল শিক্ষা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। গত ৬-৭ বছর থেকে বিভিন্ন পরীক্ষায় ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী পাস করে আসলেও বিদ্যালয়টির প্রতি কর্তৃপক্ষের সুনজর পরছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধির সাবেক সভাপতি আরিফ খান বলেন, উপজেলার মধ্যে জাড্ডা গ্রামটি সবচেয়ে অবহেলিত। আশা করি কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলো সমাধানে সুদৃষ্টি রাখবেন।
জাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুত্ফর নাহার বেগম জানান, প্রায় বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে অদের খালের শাখা বয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্কুল চলাকালে পুরোটা সময়ই শিক্ষক ও অভিভাবকদের আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। খালটিকে বড়াট বা বিদ্যালয় এলাকা পর্যন্ত কালভার্ট নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, স্কুলটিতে বিদ্যুত্ না থাকার কারণেই আইসিটি বিষয়ে কোন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ ও ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়নি। বর্তমানে স্কুলটি বিদ্যুত্ পাওয়ায় আইসিটি বিষয়ে শিক্ষকের প্রশিক্ষণ ও ল্যাপটপের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। খাল থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষায় বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ, শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিতু মরিয়ম বলেন, স্কুলছাত্রদের নিরাপত্তার জন্য বাউন্ডারি উয়াল নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।