প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ থেকে আন্দোলনে নামে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে পা রেখে অনেকে ফায়দা নিতে চেয়েছিল। এদের মধ্যে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অনেকেই ছিলেন। তাদের উস্কানি ও মিথ্যা প্রচারের কারণে শিশুদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়তে পারত, সে কথা না ভেবে শিশুদের বিক্ষোভকে ব্যবহার করে ফায়দা লোটার চেষ্টা হয়েছিল। শুক্রবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে গণভবনে ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে যখন ব্যবস্থা নিলাম, তখনই চারদিকে যেন হাহাকার শুরু হয়ে গেল। আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকেও বিভিন্ন রকম চাপ।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গত ৫ আগস্ট রাতে দৃক গ্যালারি ও পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা শহিদুলকে পুলিশ গ্রেফতার করে। শহিদুলকে গ্রেফতারের নিন্দা আর তার মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছে দেশি-বিদেশি নানা সংগঠন ও মানবাধিকারকর্মীরা। নোবেলজয়ী ডেসমন্ড টুটু, শিরিন এবাদি, মুহাম্মদ ইউনূসের পর অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনও দাঁড়িয়েছেন কারাবন্দি আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের পক্ষে।
স্কুল জীবন থেকে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা হাসিনা আলোচনা সভায় বলেন, আইয়ুব খান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিল। স্কুলে একটা চ্যাপ্টার ছিল পাকিস্তান চ্যাপ্টার, ২০ নম্বর। আমি মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিলাম ওই ২০ নম্বর বাদ দিয়ে। কারণ আমি আইয়ুব খানের প্রশংসা লিখব না, আমি লিখতে পারি না। কাজেই আমি সেই মানুষ। ২০ নম্বরের জন্য ফেলও করতে পারতাম। কিন্তু নীতির সাথে আপোস করিনি।
তিনি বলেন, ছাত্ররাজনীতি করলেও সে সময় তিনি নেতা হননি। সংগঠনের প্রয়োজনে যেখানে দায়িত্ব দিয়েছে, সেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন তারা সব ভাই-বোন।
ছাত্রলীগকে তাদের আদর্শ-শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি মেনে চলার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, নিজেদের আদর্শের নেতা হিসাবে গড়তে পারলে কিছু করতে পারবে। আর যদি সম্পদের লোভে গা ভাসিয়ে দাও, তাহলে হারিয়ে যাবে, ভেসে যাবে। বহু ছাত্র নেতা চলে গেছে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।