শিশুদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করার শ্রেষ্ঠ উপায় কী? - দৈনিকশিক্ষা

শিশুদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করার শ্রেষ্ঠ উপায় কী?

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

মূলত ইংরেজি ‘ডিসিপ্লিন’ শব্দটির অর্থ ‘শেখা’। আপনি যদি বলেন ‘আমি শৃঙ্খলাবদ্ধ’, তার মানে আপনি এখনো শিখতে ইচ্ছুক, আপনি থেমে যাননি। শৃঙ্খলা মানে নির্দিষ্ট উপায়ে কোনো কাজ করা নয়। আপনি যদি অনবরত প্রচেষ্টা করে যেতে রাজি থাকেন আর শিখতে ইচ্ছুক থাকেন যে প্রত্যেকটা কাজকে আরো ভালো করা যায় কীভাবে—তাহলেই আপনি শৃঙ্খলাবদ্ধ। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও বলা হয়, কাউকে জোর করে কাজ করানো যদিওবা সম্ভব, তবে জোর করে কখনোই কিছু শেখানো যায় না। আর জোর করে কাজ করানোটাও অল্প সময়ের জন্যই সম্ভব। কারণ, কিছু সময়ের পর ব্যাপারটা এরকম দাঁড়ায় যে, আপনি জোর করে কাজ করানোর চেষ্টা করে যাবেন আর তারা নানা কৌশলে কাজ এড়ানোর চেষ্টা করে যাবে।

খুব সাধারণ কিছু ব্যাপার, যেমন, আমরা যেখানেই থাকতাম না কেন দুপুরের আর রাতের খাবার খেতে বাড়ি ফিরতেই হতো। একজন না এলেও বাকি গোটা পরিবার অপেক্ষা করে থাকত, যার ফলে সময়ের মধ্যে ফিরে না আসার সুযোগই ছিল না। এটা চাপিয়ে দেওয়া কোনো ব্যাপার নয়। পরিবেশটাই এমন তৈরি করা হয়েছিল যে আপনি স্বভাবতই সেটার অংশ হয়ে উঠতেন।

আদতে ব্যাপারটা এটাই দাঁড়াচ্ছে—যে কাজটা প্রয়োজন সেটা একটা সুনির্দিষ্টভাবে করা। আপনি যদি আপনার জীবনে একটি নির্দিষ্ট মান বজায় রাখতে চান তাহলে আপনাকে একটি পরিষ্কার জায়গা সৃষ্টি করতে হবে। তার জন্য আপনাকে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। সেগুলো যদি আপনি করতে রাজি না থাকেন তাহলে আপনাকে খারাপ অবস্থার মধ্যেই থাকতে হবে। প্রথমে, আমাদের অগ্রাধিকারগুলো নির্ণয় করা প্রয়োজন। কোনো একটা কাজ করার প্রয়োজনীয়তা কী—সেটা যদি আপনি কোনো মানুষকে বোঝাতে পারেন তাহলে আমার মনে হয় যে কোনো বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষই সেটা করতে রাজি হবেন। আপনি যদি নিজে বিচক্ষণ হন তাহলে আপনি নিজেই বুঝে যাবেন কী করণীয়। যদি নিজে নাও বোঝেন, অন্তত কেউ যদি আপনাকে বোঝায় তাহলে আপনি শুনবেন এবং বুঝবেন। আপনি যদি কিছুই না বোঝেন তাহলে আপনি নিশ্চয়ই বোকা, আর বোকাদের প্রতি সেরকমই ব্যবহার করা হবে! আর লোকজন যদি আপনাকে বোকা নাও ভাবে, সেরকম ব্যবহার নাও করে, তাও আপনি বোকার মতনই জীবন কাটাবেন।

আমাদের বাড়িতে, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, মা দুবার ঘরদোর ঝাড় দিতেন, একবার সকালে একবার সন্ধ্যায়ে, আর একবার করে ঘর মুছতেন। কাজের লোক না এলেও। এটা না করে তিনি স্নান করতেন না, খাবার খেতেন না। আপনি যদি এটা আপনার চোখের সামনে দেখেন তাহলে নিজের মাকে একা হাতে সারা বাড়িটা পরিষ্কার করতে দেবেন? দেবেন না। তাই সবাই মিলে একসঙ্গে পরিষ্কার করা হতো, যে যতটা পারত। যদি এরকম হতো যে শুধু কাজের লোকই এটা করতেন, আর কাজের লোক না থাকলে মা এটা করতেন না, তাহলে আমরাও কখনোই এটা করার কথা ভাবতাম না। আমরা এটাই ভাবতাম যে, কাজটা শুধু কাজের লোকেরই করার কথা। কিন্তু যখন দেখতাম মা কোনো দ্বিধা ছাড়াই এটা করছেন তখন আমাদের এটা না করে কোনো উপায় থাকত না। সবাইকে করতেই হতো।

এই ছোটো ছোটো জিনিসগুলোই পার্থক্য গড়ে তোলে। আপাতদৃষ্টিতে তুচ্ছ ব্যাপার মনে হতে পারে। যেমন বিছানা থেকে কীভাবে উঠবেন, চায়ের কাপটা কোথায় রাখবেন...দুর্ভাগ্যক্রমে এই জিনিসগুলো অনেক পরিবারেই থাকে না। এগুলো না করলে কেউ আমাদের কখনো বকাঝকা করত না, কিন্তু মা এসে নিজের হাতেই এগুলো করতে থাকতেন। তো, যখন মাকে করতে দেখতাম তখন নিজেরাও না করে থাকতে পারতাম না।

সংস্কৃতি কখনোই পাঠ্যপুস্তক বা প্রচারকদের মাধ্যমে প্রেরিত হয়নি। পরিবারের জীবনশৈলীর মাধ্যমেই এটা প্রেরিত হয়ে এসেছে। খাবারের ঘর কীভাবে থাকবে, বাথরুম কীভাবে থাকবে, এই সবকিছু নির্ধারিত করা ছিল এবং সেভাবেই মানা হতো। আপনি সেগুলো মানবেন কি না এ ব্যাপারে কেউ জোর খাটাত না আপনার ওপর। কিন্তু আপনি কত দিন না মেনে থাকবেন? যখন সবাই করছে, আপনিও ধীরে ধীরে সেটার অংশ হয়েই উঠবেন।

যোগাভ্যাস যদি আপনি একটি শিশুর জীবনে নিয়ে আসেন, সে শৃঙ্খলা শিখবে না এটা হতেই পারে না। যোগের অভ্যাস জীবনে শৃঙ্খলা নিয়ে আসে, কারণ কিছু জিনিস নির্দিষ্টভাবেই করতে হয়, না হলে সেটা কাজ করে না। যোগ এত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে শেখানো হয় যে সেটা একবার আপনি অভ্যাস করা শুরু করলে আপনি শৃঙ্খলাবদ্ধ না হয়ে থাকতে পারবেন না।

সৌজন্যে : ঈশা ফাউন্ডেশন।

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0075101852416992