শূন্য পাসের কারণে সারাদেশের ১৮২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। এর মধ্যে রাজশাহীর ছয়টি মাদরাসা রয়েছে। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে পাবলিক পরীক্ষা (জেডিসি, দাখিল ও এইচএসসি) এইসব প্রতিষ্ঠান থেকে কোনও পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। বোর্ড থেকে কারণ দর্শানের নোটিস দিলে তার জবাব দেয়া হয়েছে বলে দৈনিক শিক্ষাকে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানগুলোর সুপার ও শিক্ষকরা।
জানা গেছে, তালিকায় থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর এমপিও বন্ধ করা হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত নন তাদের একাডেমিক স্বীকৃতি ও পাঠদানের অনুমতি বাতিল করা হবে। প্রথম ধাপে তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। এ তালিকায় রাজশাহীর পবা-বাগমারা উপজেলার দুইটি এবং তানোরের চারটি মাদরাসা রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, পবার আলীগঞ্জ দারুল সুন্নাত আলিম মাদরাসা, বাগমারার বীরকয়া দাখিল মাদরাসা, তানোরের কাদিরপুর দাখিল মাদরাসা, ভাঙ্গা মানিক কন্যা দাখিল মাদরাসা, পাঁচান্দ মহিলা দাখিল মাদরাসা ও কলমা ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা।
এ বিষয়ে রাজশাহীর পবার আলীগঞ্জ দারুল সুন্নাত আলিম মাদরাসার সুপার নূর মোহাম্মদ খান দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে আলিম পর্যায়ে অনুমোদন পেয়ে ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে শিক্ষার্থীরা পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ৭ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়, কিন্তু সবাই ফেল করেছে। তিনি বলেন, এটি নন এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আলিম পর্যায়ে মাত্র তিনজন শিক্ষক রয়েছে। আরবীর প্রভাষক দুজন ও ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের একজন শিক্ষক রয়েছে। এবছর আলিম পরীক্ষায় ১০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবে।
তানোরের কাদিরপুর দাখিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার রবিউল ইসলাম বলেন, তার প্রতিষ্ঠানে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে দাখিল পরীক্ষায় দুইজন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। তারা দুইজনই ফেল করেছে। এটি নন এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের মোট ১১ জন শিক্ষক। তিনি বলেন, সব শিক্ষার্থী ফেল করায় মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছিলো। পরে জবাব দিয়েছি।’
তানোরের ভাঙ্গা মানিক কন্যা দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মাহবুব আলম বলেন, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের দাখিল পরীক্ষায় চার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে সবাই ফেল করে। কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছিলো জবাব দিয়েছি। প্রতিষ্ঠানের মোট ১৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে।’
অন্যদিকে, একই উপজেলার পাঁচান্দ মহিলা দাখিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার নাসির উদ্দিন বলেন, একজন শিক্ষার্থী ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ফেল করেছে। এটি নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৩ জন শিক্ষক রয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের কারণ দর্শানোর নোটিসে জবাব দিয়েছেন তিনি বলে জানান।’
উপজেলার কলমা ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার সুপার আবদুর রউফ বলেন, ‘তার প্রতিষ্ঠানে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে আলিম থেকে একজন শিক্ষার্থীও ছিল না। নন এমপিও প্রতিষ্ঠান এটি। শিক্ষক রয়েছে বাংলা, ইতিহাস ও আরবী মিলে তিনজন প্রভাষক। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের কারণ দর্শানোর নোটিসে জবাব দিয়েছেন বলে জানান তিনি।’
এদিকে, বাগমারার বীরকয়া দাখিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার ভারপ্রাপ্ত রফাতউল্লাহ্ বলেন, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের দাখিল পরীক্ষায় চারজন পরীক্ষা দিয়ে সবাই পাস করে। তাকে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে কোনও কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়নি।’