১৯ বছরেও এমপিওভুক্ত হয়নি রানীনগর উপজেলার কুজাইল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। ফলে বিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষক-কর্মচারী মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সংসারের খরচ চালাতে শিক্ষকতার পাশাপাশি হালচাষ পর্যন্ত করছেন তাদের কেউ কেউ। এমপিওভুক্তির জন্য সব শর্তাদি পূরণ থাকার পরও গতবারের ঘোষণার তালিকায় বিদ্যালয়টি স্থান না পাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
ওই বিদ্যালয়ের বর্তমানে চার শিক্ষক, একজন নৈশপ্রহরী ও একজন লাইব্রেরিয়ান রয়েছেন।
জানা গেছে, রানীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের কুজাইল এলাকায় নারী শিক্ষার আলো ছড়াতে ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে কুজাইল বালিকা বিদ্যালয় নামে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করেন স্থানীয় গণ্যমান্য ও সচেতন ব্যক্তিরা।
পড়ালেখার মান ও যোগ্যতা বলে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পায় এ প্রতিষ্ঠানটি। ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত তালিকায় স্থান পায়।
শিক্ষকরা জানান, বর্তমানে বিদ্যালয়ে প্রায় ২৫৭ শিক্ষার্থী রয়েছে। '১৬, '১৭ ও '১৮ খ্রিষ্টাব্দে এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পাসের রেকর্ড করেছে এ বিদ্যালয়।
বিদ্যালয়টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উত্তীর্ণসহ সমুদয় শর্তপূরণ করলে এমপিওভুক্ত তালিকায় স্থান পাবেন এমনটি আশা করলেও শেষ পর্যন্ত ভাগ্য খুলেনি তাদের।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রাব্বেল হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষক-কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে বিনা বেতনে চাকরি করছেন। বিদ্যালয়টিতে পড়ালেখার মান ও স্বীকৃতির ভিত্তিতে গত ঘোষণার তালিকায় স্থান পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হলো না। বিদ্যালয়টির প্রতি সুদৃষ্টি দিয়ে এমপিওভুক্ত করতে সরকারের প্রতি দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে কুজাইল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলী হোসেন ও মো. এমরান আলীসহ জানান, শূন্যপদে চাকরিতে যোগদান করার পর থেকে বিনা বেতনে প্রায় ১৯ বছর শ্রম দিয়ে যাচ্ছি। ঈদ বা অন্য কোনো উৎসবে আনন্দ করা তো দূরের কথা টিউশনি ও হালচাষ করে সেই সময় বাড়তি আয় করি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে এই সময়ে সংসার পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
বিদ্যালয়টি দ্রুত এমপিওভুক্ত করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তারা।
এ ব্যাপারে রানীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল জলিল শিক্ষক-কর্মচারীদের মানবেতর জীবনযাপনের কথা স্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার মান ভালো রয়েছে। আসা করছি আগামীতে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হবে।