সক্রিয় সিন্ডিকেটে ভাঙ্গুড়ায় রমরমা গাইড বাণিজ্য - দৈনিকশিক্ষা

সক্রিয় সিন্ডিকেটে ভাঙ্গুড়ায় রমরমা গাইড বাণিজ্য

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি |

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় অবাধে চলছে প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের নিষিদ্ধ নোট-গাইড বই বাণিজ্য। বাজারের বইয়ের দোকানগুলোতে খেলামেলা এসব গাইড বিক্রি হলেও এ নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই স্থানীয় প্রশাসনের, চোখে পড়েনি কোনো বিশেষ নজরদারি। ফলে গাইড ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মূল্যে দোদারে বিক্রি করছে নিষিদ্ধ ঘোষিত এসব গাইড বই।

এদিকে, অতিরিক্ত মূল্যে এসব গাইড বই কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে মেধাবী শিক্ষার্থীরা। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের অভিভাবকদের উঠছে নাভিঃশ্বাস। কোনো প্রতিকার না পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, ভাঙ্গুড়া উপজেলায় প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক মিলে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের এক শ্রেণির অসাধু শিক্ষক ও শিক্ষক সমিতির যোগসাজশে গাইড প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি ও গাইড বিক্রেতা দোকান মালিকরা গড়ে তুলেছে একটি বড় সিন্ডিকেট।

নতুন বছরের শুরুতে গাইড প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধিরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী অনুপাতে পাঁচ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত অগ্রিম দিয়ে থাকেন কতিপয় অসাধু শিক্ষক বা শিক্ষক সমিতিকে। এসময় তাদের হাতে ওই সকল প্রকাশনীর গাইড বইয়ের তালিকাও দিয়ে ধরিয়ে হয়।

অসাধু শিক্ষকরা এ সুযোগ হাত ছাড়া করতে চান না। তাই ক্লাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা শিক্ষার্থীদের হাতে গাইড বইয়ের তালিকা ধরিয়ে দিয়ে তা কিনতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।

এদিকে, গাইড বই কেনার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা অবাধ্য হলেই তাদের উপর চলে বিভিন্ন মানসিক নির্যাতন। ব্যবহারিকে নম্বর কম দেয়া ও নির্ধারিত গাইড থেকে প্রশ্ন তৈরি করে মডেল টেস্ট পরীক্ষা নেয়াসহ শিক্ষার্থীদের উপর বিভিন্ন ঝামেলার সৃষ্টি করে সংশ্লিষ্ট অসাধু শিক্ষকরা। ফলে শিক্ষার্থীদেরকে অনেকটা বাধ্য হয়েই চড়া দামে গাইড বই কিনতে হয়।

অপরদিকে, গাইড ব্যবসায়ীরা ‘দোকান মালিক সমিতি’ নামে সিন্ডিকেট তৈরি করে সব দোকানে বইয়ের ন্যূনতম দাম নির্ধারণ করে দেয়। ফলে সবকিছু মিলিয়ে শিক্ষার্থীরা জিম্মি হয়ে পড়ে। 

সরকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের নতুন বছরের শুরুতে বিনা মূলে পাঠ্য বই দিয়ে থাকেন। সেই সাথে তাদেরকে বাংলা ব্যাকরণ ও ইংরেজি গ্রামার বইও বিনা মূল্যে দেন। যার ফলে খোলা বাজার থেকে অতিরিক্ত গাইড বাই কেনার কোনো প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু শিক্ষক সরকার প্রদত্ত বই না পড়িয়ে গাইড বই পড়ানোর প্রতি বেশি ঝুঁকে পড়েছেন। এতে সৃজনশীল মেধা বিকাশে বাধ্যগ্রস্থ হচ্ছে বলে মনে করেন সচেতন মহল।

সরেজমিনে ভাঙ্গুড়া বাজারের মাস্টার লাইব্রেরি, ইসলামিয়া লাইব্রেরি ও শরৎনগর বাজারের মাহমুদ লাইব্রেরিতে গিয়ে দেখা  যায়, আলফা, পাঞ্জেরী, অক্ষরপত্র, লেকচার, নবদূত, সিস্টেমেটিক, নতুন কুঁড়িসহ বিভিন্ন প্রকাশনীর গাইড বই বিক্রি হচ্ছে। গাইড বই কিনতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘অনেকটা বাধ্য হয়েই মোটা অঙ্কের টাকায় গাইড কিনতে হচ্ছে। কারণ গাইড ছাড়া ছেলে স্কুলে যাবে না।’

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাইফুল আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের গাইড বই পড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সরকার প্রদত্ত বিনা মূল্যে পাঠ্যবই ঠিকমতো পড়াতে হবে এর ব্যতিক্রম করা যাবে না।’

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0042459964752197