সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার উদ্যোগ বাস্তবায়িত হোক - দৈনিকশিক্ষা

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার উদ্যোগ বাস্তবায়িত হোক

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

দেশে উচ্চশিক্ষায় অপরিকল্পিত ভর্তি পরীক্ষার কারণে শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও মানসিক চাপ দিন দিন বেড়েই চলেছে।


তাছাড়া দুর্নীতিগ্রস্ত কোচিং বাণিজ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নোট-গাইড বইয়ের দৌরাত্ম্যে প্রকৃত শিক্ষার সুফল আমরা পাচ্ছি না।

শিক্ষাই যেখানে জাতির মেরুদণ্ড, সেখানে অপরিকল্পিত, দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষাব্যবস্থাকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। কারণ আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তনের পাশাপাশি শিক্ষা বিভাগের অনিয়ম-দুর্নীতি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।

এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা শেষে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য লাখ লাখ ছাত্রছাত্রী ঢাকায় কোচিং সেন্টারগুলোয় অংশগ্রহণ করে থাকে। এতে তাদের ঢাকা শহরে অবস্থানের চাপ অনেক বেড়ে যায়। বিশেষ করে মেয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না। তাছাড়া মেয়েদের জন্য নিরাপদ মেস (আবাসস্থল) পাওয়াও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

এইচএসসি পাসের পর উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং, সাধারণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধে পরিকল্পিত নিয়ম না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী সব ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে না।

অনেক সময় একই দিনে বা পরের দিন কয়েক জায়গায় ভর্তি পরীক্ষা হয়ে থাকে। ভর্তি পরীক্ষায় বর্তমান নিয়মে অবশ্যই পরিবর্তন এনে শিক্ষার্থী হয়রানি ও মানসিক চাপ কমাতে হবে।

উল্লেখ্য, এ ধরনের হয়রানি বন্ধে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যেই জয়েন্ট এনট্রান্স পরীক্ষা নামে একটি ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে মেধা অনুযায়ী সিরিয়ালের মাধ্যমে ভর্তি নিশ্চিত করা হয়। এ পদ্ধতি আমাদের দেশে অনুসরণ করা যেতে পারে বা আমাদের দেশে বর্তমান মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার মতো পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।

একই নিয়মে সব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা ছোটাছুটি ও যাতায়াতের ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবে।

এ ভর্তি পরীক্ষা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে নিতে পারলে ভর্তি কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে। মানসম্মত শিক্ষার জন্য কোচিং বাণিজ্য একটি বড় বাধা। ইদানীং বেশির ভাগ শিক্ষার্থী স্কুল-কলেজের ক্লাস না করে কোচিং, প্রাইভেট পড়ার দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ছে।

আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা মূলত দুর্নীতির কারণেই এগিয়ে যেতে পারছে না। সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষাব্যবস্থায় সঠিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ হবে। সৎ, যোগ্য মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। তারা পাঠদান করলেই শিক্ষার্থীরা আবার ক্লাস অভিমুখে ফিরে আসবে।

আমাদের দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে অবশ্যই শিক্ষাব্যবস্থায় কোনোরকম অনিয়ম-দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না।

লেখক: এম এ কাদের, প্রাবন্ধিক, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0069661140441895