প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা সমালোচনা চলছে। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেয়ার অভিযোগ করে অনেক শিক্ষাবিদ এ পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন।
তবে, এ পরীক্ষা অব্যাহত রাখার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর-অধিদপ্তর সব সময় সোচ্চার রয়েছে। সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ধরে রাখার জন্য ইতিবাচক প্রচারণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক চিঠিতে প্রাথমিক শিক্ষার সব বিভাগীয় উপপরিচালকদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণ সভা, মা সমাবেশ, অভিভাবক সমাবেশ, বার্ষিক ফলাফল ঘোষণার অনুষ্ঠান, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, বিভিন্ন সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন কর্মসূচিতে সমাপনী পরীক্ষার ইতিবাচক দিক, এর সুফল এবং প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান মানোন্নয়নে এ পরীক্ষার প্রয়োজন তুলে ধরে স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে উপপরিচালকদের।
অধিদপ্তরের চিঠিতে বলা হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৪০ তম বৈঠকে প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষা অব্যাহত রাখার বিষয়ে ইতিবাচক প্রচারণা চালানোর সুপারিশ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের সুপারিশে উল্লেখ করা হয়, বিগত ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ হতে সারা দেশে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রতি বছর ৩০ লাখ ছাত্র-ছাত্রী এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ সকলেই সমাপনী পরীক্ষার মাধ্যমে দিন দিন মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে বিভিন্ন সময় মতামত ব্যক্ত করেন।
এছাড়া, পরীক্ষা থাকলে ছাত্র-ছাত্রীরা বেশি পড়াশুনা করে- এ সংস্কৃতি আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। সমাপনী পরীক্ষার মাধ্যমে একই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে, বিভিন্ন স্কুলের মধ্যে, উপজেলার মধ্যে এক ধরনের নিরব প্রতিযোগিতা চলে, যা শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে সহায়তা করে। আবার সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলকে ভিত্তি করেই প্রাথমিক বৃত্তি দেওয়া হয়ে থাকে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাকে কেন্দ্র করেই সব ধরনের প্রতিষ্ঠান প্রতক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের আওতায় এসেছে, যা একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য মঙ্গলদায়ক। সে প্রেক্ষিতে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা অব্যাহত রাখার বিষয়ে ইতিবাচক প্রচারণা চালানোর জন্য বিভাগীয় সমম্বয় সভা, জেলা সমন্বয় সভা এবং উপজেলা পর্যায়ের প্রধান শিক্ষকদের মাসিক সমন্বয় সভায়, ম্যানেজিং কমিটির সভায় ও বিভিন্ন সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণ সভা, মা সমাবেশ, অভিভাবক সমাবেশ, বার্ষিক ফলাফল ঘোষণার অনুষ্ঠান, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, বিভিন্ন সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার বিভিন্ন কর্মসূচিতে পিএসসি পরীক্ষার ইতিবাচক দিক ও এর সুফল এবং প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান মানোন্নয়নে এর প্রয়োজন তুলে ধরা প্রয়োজন।
এসব বিষয়ে স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর জন্য প্রাথমিকের সব বিভাগীয় উপপরিচালকদের নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।