১২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর মুক্ত হয়েছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার ও কর্মকর্তারা । বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বদরুল ইসলাম শুয়েব আজ শুক্রবার অনুষ্ঠেয় কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করলে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন ছাত্রলীগের একাংশ ও কর্মচারী পরিষদের নেতারা।
এর আগে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলসহ দুই দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ও প্রক্টর কার্যালয়ের ভবনের মূল ফটক তালাবন্ধ করে বিক্ষোভ করেন শাখা ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মী ও কর্মচারী পরিষদ নেতারা। এদিকে সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী পরিষদ ছয় দফা দাবিতে কর্মবিরতি এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে সিলেট নগর আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও সিলেট সিটি করপোরেশনের ২০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে গিয়ে উপাচার্য ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন । পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেন।
গত বছর ১৮ জুন প্রকাশিত ৯৩ জন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ১০ জানুয়ারি লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী পরিষদ কর্মচারীদের পর্যায়োন্নয়ন নীতিমালা অতি দ্রুত সংশোধন, অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের অতিসত্বর কার্ড ইস্যু করা, শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মচারীদের উচ্চতর পদে প্রমোশনের জন্য অতিসত্বর ইমিগ্রেশন কমিটি গঠন, হাউজ লোন দ্রুত বাস্তবায়ন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, কর্মচারীদের পোশাক ভাতা দ্রুত বাস্তবায়ন ও কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষা চালু করলে পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়োগের ক্ষেত্রে পরীক্ষা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশাসন বরাবর দাবি জানান কর্মচারী পরিষদের নেতৃবৃন্দ। প্রশাসনের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি ও আন্দোলনে নামেন তারা।
গত ৬ তারিখে কর্মচারী পরিষদের সভাপতি ছানারুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম অন্যান্যদের নিয়ে সভায় এ সিদ্ধান্ত নেন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ কর্মচারীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে তাদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে পৃথক দাবি জানান। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীবৃন্দ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের ন্যায্য আন্দোলনে ছাত্রলীগ সমর্থন জানাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা কেন শোষণের শিকার হবে এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন তোলেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ডা. শামীম মোল্লা কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রার্থী হয়ে ভাইবা দিলেও সিন্ডিকেটে তার চাকরি বাতিল হয়। অন্যদের চাকুরি হওয়া সত্ত্বেও তার চাকরি কেন বাতিল হয় এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে জবাব চান তারা।
বদরুল ইসলাম বলেন, নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার জন্য যেসব প্রার্থীদের মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠানো হয়েছিল তাঁদের ফের খুদে বার্তায় পরীক্ষা বাতিলের বিষয়টি অবহিত করা হবে। এর পরপরই প্রশাসনিক ভবন ও প্রক্টর কার্যালয়ের ভবনের মূল ফটক খুলে দেন বিক্ষোভরত কর্মকর্তা কর্মচারী পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা আসিকুর রহমান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করায় আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে প্রশাসনিক ভবন ও প্রক্টর কার্যালয়ের ভবনের মূল ফটকে তালা দেওয়া হয়েছিল। পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণা দেওয়ায় অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এদিকে কর্মচারী পরিষদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় তাঁরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে।