তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে সিলেটে শুরু হয়েছে বইপড়া উৎসব। হাজারো শিক্ষার্থীর সরব উপস্থিতিতে গতকাল শনিবার বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় দুই মাসব্যাপী এই উৎসবের।
উৎসবে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের বই।
‘জ্ঞানের আলোয় অবাক সূর্যোদয়!/এসো পাঠ করি/বিকৃতির তমসা থেকে/আবিষ্কার করি স্বাধীনতার ইতিহাস’ স্লোগানে এক যুগ ধরে ধারাবাহিকভাবে বইপড়া উৎসব আয়োজন করে আসছে জীবনমান উন্নয়ন প্রয়াসী সংস্থা ‘ইনোভেটর’।
গতকাল বিকেলে বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী অনিমেষ বিজয় চৌধুরীর নেতৃত্বে ও ইনোভেটরের সম
ন্বয়ক আশরাফুল ইসলাম অনির তত্ত্বাবধানে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। এর আগে দুপুর ২টা থেকে সিলেটের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এসে জড়ো হতে থাকে। রিপোর্টিং বুথে উপস্থিতি জানানোর পরপরই তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি করে লাল সবুজ পতাকা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইনোভেটরের মুখ্য সঞ্চালক সিটি কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলা প্রশাসক মো. রাহাত আনোয়ার, সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লুত্ফুর রহমান, এভারেস্ট-জয়ী প্রথম বাংলাদেশি মুসা ইব্রাহিম এবং প্রবাসী বিজ্ঞানী ও অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মুহাম্মদ জহিরুল আলম সিদ্দিকী। স্বাগত বক্তব্য দেন ইনোভেটরের নির্বাহী সঞ্চালক প্রণবকান্তি দেব।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘দেশপ্রেমের শিক্ষা দিতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠের কোনো বিকল্প নেই।
আর বই হচ্ছে ইতিহাসের ধারক। বৈচিত্র্যময় বই পাঠ আমাদের জীবনকে জ্যোতির্ময় করে তুলে। একাত্তর বাঙালির জীবনে সে রকমই একটি জ্যোতির্ময় অধ্যায়। ’ তরুণ প্রজন্মকে উদ্দেশ করে বক্তারা বলেন, “‘মুক্তিযুদ্ধ’ কেবল একটি শব্দ নয়; এর আড়ালে রয়েছে অত্যাচারীর নাগপাশ থেকে মুক্ত হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা, সংগ্রাম আর মুক্তি অর্জনের প্রতিজ্ঞা। দেশপ্রেমিক একটি তরুণ প্রজন্মের মাধ্যমেই কেবল মুক্তিযুদ্ধের অর্জন সমুন্নত রাখা সম্ভব। ” ইনোভেটরের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হওয়ার এ আন্দোলন তরুণ প্রজন্মকে নতুন পথের সন্ধান দেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বক্তারা।
২০০৬ সাল থেকে নিয়মিত বইপড়া উৎসবের আয়োজন করে আসছে ইনোভেটর। এ বছর বইপড়া উৎসবে সিলেটের ৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৯৮৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। উদ্বোধনী দিনে তাদের হাতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নির্ধারিত বই তুলে দেওয়া হয়েছে। দুই মাস বই পড়ার পর আগামী ২৩ মার্চ চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হবে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা। প্রতিযোগিতা থেকে সেরাদের বাছাই করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রণবকান্তি দেব।