সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও বরিশাল বিএম কলেজের পরিসংখ্যান বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপক শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা ইফতেকার আলীর বিরুদ্ধে দায়ের করা বিভাগীয় মামলার শুনানি আগামী ২৯ মে বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের কক্ষে ওইদিন সকাল ১০টায় শুনানি গ্রহণ করা হবে। রোববার (১৯ মে) অভিযুক্ত শিক্ষা কর্মকর্তা ইফতেকার আলীকে তলব করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
অবৈধভাবে নিয়োগ বাগানো, তথ্য গোপন করে লিয়েন নেয়া, নির্মাণ কাজে কলেজের কোটি টাকা লুটপাট, শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সামনে অকথ্য বক্তব্য এবং রেজুলেশন পরিবর্তনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ইফতেকারের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৩১ মার্চ তাকে শোকজ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহবার হোসাইন স্বাক্ষরিত অভিযোগনামায় বলা হয়, সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ইফতেকার আলী বেসরকারি কলেজের নিয়োগ বিধি লঙ্ঘন করে নিয়োগ নেন এবং তথ্য গোপন করে লিয়েনের আবেদন করেন। ইফতেকারের নিয়োগ আদেশের বিষয়ে একাধিক কার্যবিবরণী রয়েছে। ইফতেকার আলী সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজে যোগদানের পর ব্যবস্থাপনা কমিটির জন্য সুনির্দিষ্ট কার্যবিবরণী সংরক্ষণ করেননি। এর ফলে কার্যবিবরণী পরিবর্তন করা হয়েছে।
অভিযোগ নামায় আরও বলা হয়, ইফতেকার আলী পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অনুসরণ না করেই কলেজ তহবিল থেকে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার নির্মাণ কাজ করিয়েছেন। এ কাজে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। এছাড়া একটি প্রকাশনা সংস্থার বই পাঠ্যক্রম ও সিলেবাসে অর্ন্তভুক্ত করে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।
অভিযোগনামা পাওয়ার ১০ কার্য দিবসের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের কাছে লিখিতভাবে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছিল অভিযুক্ত শিক্ষক ইফতেকার আলীকে। তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনে ব্যক্তিগত শুনানি চাইলে তা শোকজের জবাবে উল্লেখ করতে বলা হয়েছিল নোটিশে।
উল্লেখ্য, দৈনিকশিক্ষা ডটকমে গত ১৪ জানুয়ারি ‘সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজে শিক্ষা ক্যাডারের ইফতেকারের নিয়োগ অবৈধ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারি ‘ইফতেকারের যত অপকর্ম’ শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ হলে তা শিক্ষামন্ত্রীর নজরে আসে। ১৯ ফেব্রুয়ারি কলেজের অনুষ্ঠানে গিয়ে মন্ত্রীর চোখের সামনে না আসতে অধ্যক্ষকে বলা হয়। কিন্তু তা মানেননি ইফতেকার। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির নির্দেশ অমান্য করে কতিপয় ছাত্রীকে নিয়ে মঞ্চে উঠেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সামনে অকথ্য ভাষায় বক্তব্য দেন। নির্দেশ অমান্য করায় তাকে শোকজ করেছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এ প্রেক্ষিতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তার লিয়েন বাতিল করে তাকে ওএসডি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর তাকে বিএম কলেজে বদলি করা হয়।