স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের আত্তীকরণ দ্রুত শেষ করতে হবে : শিক্ষামন্ত্রীর কড়া নির্দেশ - দৈনিকশিক্ষা

স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের আত্তীকরণ দ্রুত শেষ করতে হবে : শিক্ষামন্ত্রীর কড়া নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সরকারিকৃত স্কুল ও কলেজ শিক্ষকদের আত্তীকরণের কাজ অস্বাভাবিক ধীরগতিতে চলায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মঙ্গলবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে গিয়ে  সরকারিকৃত স্কুল ও কলেজ শিক্ষকদের আত্তীকরণ ও পদসৃজনের কাজের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণায় সরকারিকৃত স্কুল ও কলেজ শিক্ষকদের আত্তীকরণের কাজের খোঁজখবর নিয়ে অধিদপ্তরের কলেজ শাখার কর্মকর্তাদের প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী। একই সাথে আত্তীকরণের কাজ শেষ হতে কত সময় লাগবে তার সুস্পষ্ট ‘টাইমফ্রেম’দিতে বলেন তিনি। 

মঙ্গলবার দুপুরে ‘সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচির আওতায় শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বিতরণ’ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে যান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কক্ষে বসে সরকারিকৃত স্কুল ও কলেজগুলোর আত্তীকরণের কাজের খোঁজ খবর নেন তিনি। কক্ষে উপস্থিত একাধিক সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষকদের আত্তীকরণের কাজের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চান। কতগুলো কলেজের তথ্য যাচাই বাছাই করা হয়েছে এবং কতগুলো কলেজের যাচাই বাছাই বাকি আছে তা কাগজপত্রসহ সুস্পষ্টভাবে শিক্ষামন্ত্রীর সামনে উপস্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয় কর্মকর্তাদের। 

২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে দেশের যেসব উপজেলায় সরকারি কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় সেসব উপজেলায় একটি করে কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারি করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই হিসাবে ৩০২টি কলেজ ও প্রায় তিনশ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারি হয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের তিন বছর পার হলেও সরকারি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। কারণ কলেজগুলোর আত্তীকরণের কাজ শেষ হয়নি। একইভাবে সরকারিকৃত স্কুলগুলোর শিক্ষকদের আত্তীকরণ বলতে গেলে থেমেই রয়েছে। 

সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রয়ী নেতৃবৃন্দ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে শিক্ষা অধিদপ্তরের কয়েকজন প্রতিহিংসাপরায়ন ও জামাতপন্থী কর্মকর্তা তাদের অহেতুক হয়রানি করছেন। তিনি বছর পার হলেও সরকারি সুযোগ সুবিধা পাননি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এতে শেখ হাসিনার অগ্রাধিকারভুক্ত কাজের গতি থামিয়ে দিচ্ছেন ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শী কর্মকর্তারা।  

জানা যায়, শিক্ষকদের আত্তীকরণের কাজ আটকে রাখায় গত ডিসেম্বরেও শিক্ষামন্ত্রী অধিদপ্তরের এসে মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুককে সরকারিকরণ হওয়া কলেজ শিক্ষকদের আত্তীকরণের কাজের অগ্রগতির বিষয়ে জানানো নির্দেশ দেন। এ সময় মন্ত্রীকে নানা গোঁজামিল দিয়ে বোঝাতে চেষ্টা করেন কর্মকর্তারা। কর্মকর্তাদের বক্তব্য ছিল, আত্তীকরণের কাজটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। সহজেই শেষ হবে না। 

এদিকে সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ শাখার কর্মকর্তারা কোন এক অজানা কারণে সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষকদের আত্তীকরণের কাজে গড়িমসি করছেন। বর্তমানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ শাখার পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকতা অধ্যাপক শাহেদুল খবীর চৌধুরী। মুজিবর্ষেই আত্তীকরণ ও পদসৃজনের কাজ শেষ করতে তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। 

সরকারিকৃত শিক্ষকদের অভিযোগ নতুন সরকারি হওয়া কলেজগুলোর শিক্ষকদের যাতে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের মর্যাদা দেয়া না হয় সে জন্য ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে ডিসেম্বরে ‘নো বিসিএস নো ক্যাডার’ শিরোনামে আন্দোলনে নামেন আগে থেকে সরকারি থাকা কলেজগুলোর শিক্ষকরা। একপর্যায়ে এই দাবিতে ওই বছরের ডিসেম্বরে বিসিএস শিক্ষা সমিতির মহাসচিব মো. শাহেদুল খবীর চৌধুরী ও মো. মঈনুল হোসেন আদালতে রিট করেন। আন্দোলন ও রিটের কারণে ২ বছর ২ মাস ১৪ দিন দেরি করে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ জুলাই নতুন সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা-১৮ জারি করা হয়। এতে বলা হয়, নতুন সরকারি হওয়া কলেজ শিক্ষকরা নন-ক্যাডার মর্যাদা পাবেন। আগের বিধিতে ক্যাডার মর্যাদা দেয়া হত। এরপর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১২ আগস্ট প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

সে বছরের সেপ্টেম্বরে সদ্য সরকারি হওয়া কলেজগুলোতে সমন্বিত পদ সৃষ্টি করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে আদেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা জেলার সদ্য সরকারি হওয়া ৪টি কলেজের তথ্য নিয়ে পরীক্ষামূলক কাজও শুরু হয়। সমিতির মহাসচিব অধ্যাপক শাহেদুল খবীর চৌধুরী কলেজ পরিচালক হিসেবে পদায়ন পেয়েই সমন্বিত পদ সৃষ্টির কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। তিনি নতুন ফরমান জারি করে বলেন, নতুন সরকারি হওয়া কলেজের প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক পদ সৃজনের জন্য প্রথমে ২০টি কলেজ ও পরবর্তীতে তিন ধাপে ২৭৯টি কলেজ থেকে তথ্য ছক ও কর্মরতদের ব্যক্তিগত ফাইল তলব করেন। সেই তথ্য ছক ও কর্মরতদের ব্যক্তিগত ফাইল অনুসারে কার্যক্রম পরিচালনা না করে ফের ২৯৯টি কলেজের সকল মূল কাগজপত্র যাচাই শুরু করে। 

তবে অধিদপ্তরের কলেজ শাখার কর্মকর্তাদের দাবি, নতুন সরকারি হওয়া কলেজগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের নথিগুলোতে নানা ঝামেলা রয়েছে। এর ফলে আত্তীকরণের জন্য নথিগুলো যাচাই করতে গিয়ে একটু সময় লাগছে। 

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0070080757141113