ছয়শ’ চারটি স্কুল ও মাদরাসায় এক হাজার ১৯৯টি ভোকেশনাল শিক্ষক পদের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও মাত্র ৬৭৬টি পদে প্রার্থী সুপারিশ করেছিল এনটিআরসিএ। গত ২৭ জানুয়ারি এসব প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করা হয়। গত ২ মার্চের মধ্যে এসব শিক্ষকপদে যোগদানের সুযোগ দেয়া হয়। তবে, নির্ধারিত সময়ে বেশ কয়েকজন প্রার্থী সেসিপের এসব পদে যোগদান করেননি। যোগদান করেও অনেক ট্রেড ইন্সট্রাক্টর স্কুল মাদরাসাগুলোতে অনুপস্থিত রয়েছেন। কেউ কেউ পদত্যাগও করেছেন। আর ৫ শতাধিক পদে প্রার্থী পাওয়া যায়নি।
সেসিপের ভোকেশনাল কর্মসূচির আওতাভুক্ত এসব পদে নিয়োগের তথ্য চাওয়া হয়েছে। কর্মসূচির আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের কাছে যোগাযোগ করা ট্রেড ইন্সট্রাক্টরদের তথ্য চেয়েছে সেসিপ। আগামী ১০ জুনের মধ্যে এসব তথ্য ইমেইলে পাঠাতে বলা হয়েছে প্রধান শিক্ষক ও মাদরাসা সুপারদের। গত ৭জুন এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
সেসিপের যুগ্ম প্রোগ্রাম পরিচালক অধ্যাপক অধ্যাপক ড. শামসুন নাহার স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, সেসিপের আওতায় ছয়শ চারটি স্কুল ও মাদরাসায় দুইটি করে ভোকেশনাল কোর্স চালু হয়েছে। এসব স্কুলে ইতিমধ্যে এনটিআরসিএর মাধ্যমে ৬৭৬ জন ট্রেড ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগকৃতদের মধ্যে কেউ কেউ যোগদান করেছেন, কেউ করেননি। যোগদান করেও কেউ কেউ পদত্যাগ করেছেন আবার কয়েকজন ট্রেড ইন্সট্রাক্টর অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন বলে জানা গেছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইন্সট্রাক্টর নিয়োগের পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিস্তারিত তথ্য প্রয়োজন।
তাই আগামী ১০ জুনের মধ্যে ইমেইলে ট্রেড ইন্সট্রাক্টর তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে সেসিপ প্রকল্পের আওতাভুক্ত স্কুল ও মাদরাসাগুলোর প্রধানদের।
এদিকে সম্প্রতি সেসিপের মাধ্যমে নিয়োগকৃত শিক্ষকদের এমপিও আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। পরে তাদের এমপিওভুক্ত করেছে মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর
এর আগে গত ৭ জানুয়ারি ছয়শ’ চারটি স্কুল ও মাদরাসায় এক হাজার ১৯৯টি শিক্ষক পদে নিয়োগে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। গত ৮ জানুয়ারি থেকে এসব পদে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়। ২২ জানুয়ারির পর্যন্ত চলে আবেদন গ্রহণ। সে প্রেক্ষিতে গত ২৭ জানুয়ারি ৬৭৬টি পদে নিবন্ধিত প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করে এনটিআরসিএ। তবে, এসব পদে নিয়োগে ১৩ হাজার ২৭৬টি আবেদন জমা পড়লেও ৩৪৩টি পদের জন্য কোন প্রার্থী পাওয়া যায়নি। আর ১৮০টি মহিলা কোটার পদে কোন মহিলা প্রার্থী আবেদন না করায় নিয়োগ সুপারিশ করতে পারেনি এনটিআরসিএ। গত ২ মার্চের মধ্যে এসব শিক্ষকদের যোগদান করতে বলা হয়েছিল।
জানা গেছে, ১০টি বিষয়ে শিক্ষক হিসেবে এসব প্রার্থীদের সুপারিশ করা হয়েছে। ফুড প্রসেসিং, সিভিল কনস্ট্রাকশন, জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস, জেনারেল ইলেক্ট্রনিক্স ওয়ার্কস, ড্রেস মেকিং, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি, জেনারেল মেকানিক্স, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং, প্লাম্বিং অ্যান্ড পাইপ ফিটিং এবং ওয়েল্ডিং অ্যান্ড ফ্যাব্রিকেশন বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।
সাধারণ ধারার স্কুলগুলোতেও চালু হচ্ছে বৃত্তিমূলক বা ভোকেশনাল কোর্স। সাধারণ শিক্ষায় বৃত্তিমূলক কোর্স চালুর অংশ হিসেবে এসব শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। জনবল কাঠামো সংশোধন করে এসব পদের শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করা হবে। ইতোমধ্যে এসব পদে নিয়োগে সম্মতি জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে সেসিপ প্রকল্পের আওতায় ৬০৪টি স্কুল ও মাদরাসায় ৬৭৬টি পদে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হলো।
জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে সেসিপ প্রকল্পের আওতায় ছয় শতাধিক স্কুলে ভোকেশনাল কোর্স চালু করা হবে। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানগুলোর জনবল কাঠামো সংশোধন করে নতুন ৪টি পদ অর্ন্তভুক্ত করা হবে। আর জনবল কাঠামো সংশোধন করে এ স্কুলগুলোতে ২জন ট্রেড ইন্সট্রাক্টর ও ২জন ল্যাব অ্যাসিসটেন্ট নিয়োগে গত ৩ নভেম্বর সম্মতি জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সে প্রেক্ষিতে, গত ১ ডিসেম্বর স্কুলগুলোতে ২জন ট্রেড ইন্সট্রাক্টর ও ২জন ল্যাব অ্যাসিসটেন্ট নিয়োগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, সাধারণ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরও পড়তে হবে ভোকেশনাল কোর্স। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান কারিগরি শিক্ষা বোর্ড পরিচালিত ট্রেডগুলোর মধ্যে পছন্দ অনুসারে দুটি ট্রেড চালু করতে হবে। বৃত্তিমূলক শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে, কর্মমূখী শিক্ষাকে আরও জনপ্রিয় করতে এবং বেকারত্ব কমাতে এ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রতিটি সাধারণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুটি করে ভোকেশনাল ট্রেড অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে বলে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আর ইতোমধ্যে ভোকেশনাল কোর্স চালুর কাজ শুরু করেছে সরকার।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।