সিরাজগঞ্জ সদরের কালিয়া কান্দাপাড়া গ্রামে রুবিনা খাতুন (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে গুঞ্জন উঠেছে। লাশ তড়িঘড়ি করে দাফন করায় এলাকাবাসী বলছেন এটি ‘রহস্যজনক’ মৃত্যু। মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) রাতে তার লাশ দাফন করা হয়।
খবর পেয়ে বুধবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েটির বাবা রফিকুল ইসলাম ও নানা জয়নাল হাজীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, মেয়েটির বাবা-মা দুজনই গার্মেন্টকর্মী। কোরবানির ইদে মেয়েটি ঢাকা থেকে নানার বাসায় বেড়াতে আসে। খালাতো ভাই মিঠুর সঙ্গে প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বে মেয়েটি মঙ্গলবার দুপুরে আত্মহত্যা করে বলে স্বজনরা পুলিশকে জানান। এলাকাবাসী বা পুলিশকে না জানিয়ে মেয়েটিকে রাতে কান্দাপাড়া গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হলে এলাকাবাসীর মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়।
তিনি আরো জানান, বুধবার দুপুরে ওই বাড়িতে গেলে মেয়েটি জন্ডিস রোগে মারা গেছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে বলা হয়। স্থানীয়দের চাপে পরে মূল রহস্য বের হয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মেয়ের বাবা ও নানাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। পুলিশ সুপার বিষয়টি অবগত আছেন। স্বজনদের অভিযোগ না থাকায় লাশ উত্তোলন বা ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। এটি হত্যা, নাকি আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়। এলাকাবাসীর যতই অভিযোগ থাকুক না কেন, মা-বাবার লিখিত অভিযোগ পেলেই আদালতের মাধ্যমে কবর থেকে মেয়েটির লাশ উত্তোলন বা ময়নাতদন্ত করা হবে।
কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড মেম্বার রেজা তালুকদার বলেন, ‘অপরিণত বয়সের একটি মেয়ে, না হয় খালাতো ভাইয়ের সঙ্গে প্রেমই করেছে। কিন্তু, তাকে পিটিয়ে মেরেই ফেলতে হবে, এ কেমন কথা। এটি বর্বর যুগকেও হার মানিয়েছে। ওই বাড়িতে সাধারণত পুরুষ মানুষকে ঢুকতে দেওয়া হয় না। আর ঘটনার পরপরই এলাকার মেয়েদেরও ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমরাও ওই বাড়িতে ঢুকতে পারিনি। বুধবার সকালে বিষয়টি জানাজানির পর পুলিশ আসে। কিন্তু, মঙ্গলবার রাতেই তড়িঘড়ি করে মেয়েটিকে দাফন করা হয়।’
কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত ছিলাম না। গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে জানলেও পুলিশ বা এলাকার মুরুব্বিরা আমাকে কিছুই বলেননি। আমি সারাদিন ইউনিয়ন পরিষদে নানাবিধ ব্যস্ততার কারণে সেখানে যেতে পারিনি।’