স্কুলের পাশে জর্দার কারখানা, জানে না প্রশাসন - দৈনিকশিক্ষা

স্কুলের পাশে জর্দার কারখানা, জানে না প্রশাসন

শরীয়তপুর প্রতিনিধি |

শরীয়তপুরে স্কুলের পাশে গড়ে ওঠা জর্দা কারখানার তামাকের ‘উগ্র গন্ধে’ শিক্ষক শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বারবার প্রতিবাদ করা হলেও কারখানাটি বন্ধ করতে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ করছেন স্থানয়ীরা।

জেলার ডামুড্যার উপজেলার কনেশ্বর বাজারে কনেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় ও কনেশ্বর সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে ‘শরীয়তপুরী জর্দা’ নামে কারখানাটি গড়ে তুলেছেন মো. কামাল আহম্মেদ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মুনীর আহম্মেদ খান বলেন, “তামাকজাত দ্রব্য প্রকাশ্যে রৌদ্র শুকানোর কারণে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। এটা সবার জন্য ক্ষতিকর। এতে ফুসফুস ক্যান্সার হতে পারে।”

স্কুলের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, কনেশ্বর বাজারে খোলা আকাশের নিচে রোদে তামাক শুকানোর সময় গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তামাকের গ্যাস চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

এ বিষয়ে কারখানার মালিককে বারবার নিষেধ করার হলেও তিনি পাত্তা দেননি উল্লেখ করে কনেশ্বর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রচণ্ড সরকার বলেন, “ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা মানববন্ধন করেও এর প্রতিবাদ জানিয়েছে, তারপরও ‘রহস্যজনক’ কারণে তা বন্ধ হয়নি।”

কনেশ্বর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী স্বপ্না খানম বলেন, “জরুরি ভিত্তিতে অবৈধ জর্দা কারখানা বন্ধ না করলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হবে। এ জর্দার গন্ধে প্রতিনিয়ত ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে।”

আরেক শিক্ষার্থী মামুন খান বলেন, “জর্দার গন্ধে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি। তাই এ অবৈধ কারখানা বন্ধ করা হোক। এজন্য আমরা একাধিকবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছি কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।“

কনেশ্বর এস সি এডওয়াড উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ঈমান হোসেন বলেন, “আমাদের স্কুলের সামনে কাঁচা তামাক রোদে শুকানোর কারণে আমরা শ্বাকষ্টে ও ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছি।”

শরীয়তপুরী জর্দা কারখানার এক কর্মচারী নাম না বলা শর্তে বলেন, “আমাদের মালিক বাইরে থেকে কাঁচামাল এনে এখানে শুকিয়ে প্যাকেজিং করে। আমরা তার কারখানায় কাজ করি। কাগজপত্রের ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না।”

এ বিষয়ে জানতে শরীয়তপুরী জর্দা কারখানার মালিক মো. কামাল আহম্মেদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। তার বাড়ি গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুর্তজা আল মুঈদ বলেন, “শরীয়তপুর জর্দা কারখানার সম্পর্কে আমি জানতাম না। আপনার কাছ থেকে ফোন পাওয়ার পর এসি ল্যান্ডকে সেখানে পাঠানো হয়েছে।”

পরে জেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (এসি ল্যান্ড) আবদুল্লা আল মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার আমি সরেজমিনে ওই কারখানায় গিয়েছি। তবে সেখানে মালিককে পাইনি। সেখানে কর্মরত  শ্রমিকদের বলে এসেছি- মালিককে কাগজপত্র নিয়ে দেখা করতে।”  

কারখানাটি নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ সত্ত্বেও কেন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি নতুন তাই বিষয়টি আমার জানা ছিল না।” 

জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, “এ ব্যাপারে আমার কিছু করার নাই। আপনারা নিউজ করেন, নিউজের পরে ব্যবস্থা নিব।” 

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.01372504234314