নাটোরের বড়াইগ্রামে অপহরণকারীদের হাতে কামড় দিয়ে রক্ষা পেয়েছে জাহিদ হাসান (১১) নামে এক স্কুলছাত্র। শনিবার (২০ জুলাই) সকালে উপজেলার খোর্দ্দকাচুটিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর আতঙ্কে আছেন অভিভাবকরা।
স্কুলছাত্র জাহিদ ওই গ্রামের সৌরভ আলীর ছেলে এবং জোয়াড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। জোয়াড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খোদেজা বেগম জানান, জাহিদ হাসান বিদ্যালয়ে আসার পথে বাড়ির অদূরে কালো মাইক্রোবাস থেকে ৩/৪ জন লোক তাকে জোর করে মাইক্রোবাসে তোলার চেষ্টা করে। এ সময় জাহিদ তাদের হাতে কামড় দিয়ে পালানোর জন্য দৌঁড় দেয়। অপরদিক থেকে আসা এক মহিলা পথচারীর দেখা পেয়ে জাহিদ তাকে ঘটনা খুলে বলে। পরে তারা দু’জন মিলে চিৎকার শুরু করে। এতে মাইক্রোবাসটি পালিয়ে যায়। পরে জাহিদ স্কুলে না এসে বাড়ি ফিরে যায়। খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শতাধিক অভিভাবক বিদ্যালয়ে এসে ভীড় জমায়। পরে তারা নিজ নিজ সন্তানকে সাথে নিয়ে বাড়ি চলে যায়।
জোয়াড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহাজাহন আলী জানান, জাহিদের বাড়িতে গিয়ে তাকে অভয় দিয়ে আসা হয়েছে। অপরিচিতদের দেখলে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য সকল শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জাহিদ হাসানের বাবা সৌরভ আলী বলেন, কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন এলাকা থেকে ছেলেধরার খবর পাচ্ছিলাম। সেটা যে আমার গ্রামে চলে আসবে বুঝতে পারিনি। এখন ছেলেকে স্কুলে পাঠানো নিয়েই আতঙ্কে আছি। গরীব মানুষ, ছেলেকে নিয়ে স্কুলে গেলে কাজ করবো কখন।
এদিকে জোয়াড়ী বিদ্যানিকেতন কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক রাশিদা বেগম বলেন, ছেলেধরা আতঙ্কে স্কুলের সকল শিক্ষার্থীর অভিভাবককে ডেকে তাদের হাতে সন্তানদের বুঝিয়ে দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
এ সময় অভিভাবকদের পরামর্শ দেয়া হয়, তারা যেন সন্তানকে নিজ দায়িত্বে বিদ্যালয়ে পৌঁছে দেয় এবং ছুটির পর সঙ্গে করে নিয়ে যায়। যে সকল অভিভাবক আসবে না তাদের সন্তানদেরকে যেন অন্তত ৮-১০ জনের গ্রুপ করে এক সাথে বিদ্যালয়ে পাঠায়।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলিপ কুমার দাস বলেন, জোয়াড়ী স্কুলের কোনো খবর পাই নাই। তবে ছেলেধরা একটা গুজব, এটা নিয়ে প্রচারণার মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তবে জাহিদকে কারা নিয়ে যাচ্ছিলো, এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি ওসি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) হারুন-অর-রশিদ বলেন, এ বিষয়ে জানা ছিল না, স্কুলের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। পুলিশ যে কোনো ধরনের অপ্রিতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে।