১০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক মাত্র ২৭ - দৈনিকশিক্ষা

১০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক মাত্র ২৭

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি |

নারীর উচ্চশিক্ষার জন্য সুপরিচিত কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ। জেলার বিস্তীর্ণ হাওর অঞ্চলসহ অন্য এলাকার অসংখ্য শিক্ষার্থী এখানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন। বর্তমানে অধ্যয়নরত ১০ হাজার ২০০ ছাত্রী। তবে তীব্র শিক্ষক সংকটে কলেজটিতে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কলেজটিতে ১১৬ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলে আছেন মাত্র ২৭ জন। ফলে ৮৯টি পদই শূন্য রয়েছে। শিক্ষকের অভাবে শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত ফল করতে পারছেন না বলে অভিভাবকদের অভিযোগ। তাদের প্রশ্ন, এভাবে কী কলেজ চলে?

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, হিসাববিজ্ঞান বিভাগে বর্তমানে কোনো শিক্ষক নেই। অন্য বিষয়ের শিক্ষক এই বিভাগে এসে পড়ান। ইসলামের ইতিহাস বিভাগে আছেন একজন শিক্ষক। তিনি একাই একাদশ, দ্বাদশ, সম্মান ও মাস্টার্সের ক্লাস নেন।

কলেজটিতে ১৩টি বিভাগে অনার্স ও ৫টি বিভাগে অনার্সসহ মাস্টার্স চালু রয়েছে। অনার্স ও মাস্টার্স থাকা সত্ত্বেও অধিকাংশ বিভাগে সর্বোচ্চ তিনজন এবং কোনো কোনো বিভাগে দুইজন করে শিক্ষক রয়েছেন। অতিথি শিক্ষকদের দিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম কোনোভাবে চালানো হচ্ছে।

গোটা হাওরাঞ্চল, কিশোরগঞ্জের ১৩টি উপজেলা, ময়মনসিংহের নান্দাইল, নেত্রকোনার খালিয়াজুরি, কেন্দুয়া, নরসিংদীর রায়পুরাসহ ১৯টি উপজেলার ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার জন্য ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে কিশোরগঞ্জ ক্লাব-সংলগ্ন একটি ঘরে কলেজটির যাত্রা শুরু। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে শহরের পুরাতন কোর্ট রোডে পাঁচ একর জমিতে কলেজের কার্যক্রম স্থানান্তরিত হয়। ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে কলেজটি সরকারিকরণ হয়। শুরু থেকেই এখানে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে মানবিক, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান শাখা চালু রয়েছে। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে কলেজটিতে পর্যায়ক্রমে অনার্স ও মাস্টার্স চালু হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সমাজবিজ্ঞান বিভাগে পাঁচটি শাখার ক্লাস নিতে হচ্ছে দু'জন শিক্ষককে। এ বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় দু'জন অতিথি শিক্ষক নিয়োগ দিতে বাধ্য হয়েছেন কর্তৃপক্ষ। বাংলা বিভাগে সাতজন শিক্ষকের জায়গায় আছেন দু'জন। তাদের উচ্চ মাধ্যমিক ও সম্মান শ্রেণির সব ক্লাস নিতে হয়। পুরো ইংরেজি বিভাগ দেখতে হচ্ছে দুই শিক্ষককে। ইতিহাস, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকল্যাণে তিনজন করে শিক্ষক রয়েছেন।

কলেজে লাইব্রেরিয়ান, সহকারী লাইব্রেরিয়ান, স্টোরকিপার, ইলেকট্রিশিয়ান পদে কোনো লোক নেই। অফিস সহকারী আটজনের জায়গায় আছেন তিনজন। এমএলএসএসের তিনটি পদও শূন্য রয়েছে। ফলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনই বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

কলেজের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাসুদুল ইসলাম জানান, ছাত্রভর্তি ও পরীক্ষার সময় সাময়িকভাবে লোক ভাড়া করে কলেজের বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করতে হয়।

হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী রুনা আক্তার জানান, শিক্ষক সংকটে তারা সঠিক পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী রেবেকা সুলতানা জানান, একজন শিক্ষক দিয়ে আর চলছে না। মাঝেমধ্যে অতিথি শিক্ষক তাদের ক্লাস নেন। এতে ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে।

কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক হাবিবুর রহমান জানান, অধিকাংশ বিভাগে তিনজনের বেশি শিক্ষক নেই। অতিথি শিক্ষক দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালানোর ফলে কলেজ তহবিলের একটি বড় অঙ্ক এ খাতে চলে যাচ্ছে। এতে শিক্ষার মান কমছে এবং সহশিক্ষা কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। এ ব্যাপারে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিছুদিন আগে শিক্ষক সংকটের সার্বিক বিষয় তুলে ধরে শিক্ষা সচিবকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস নেয়ার মতো কক্ষ নেই। একটি একাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। আরও দুটি একাডেমিক ভবনের এবং দুটি ছাত্রীনিবাস জরুরি।

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0074038505554199