ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, অচিরেই নগদ দেশের এক নম্বর পর্যায়ে যাবে। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে সেটি সম্ভব হবে। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে দিবসটি উপলক্ষে একটি শোভাযাত্রা হয়। শোভাযাত্রায় ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্রসহ ডাক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডাক বিভাগকে অনেকে মনে করতো এটি শেষ হয়ে গেছে। কেউ ভাবতে পারছিল না যে এর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান লাভজনক হতে পারে। তিনি বলেন, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন ‘নগদ’-এর উদ্বোধন করেন। বর্তমানে প্রতিদিন নগদের লেনদেনের পরিমাণ ৮০ কোটি টাকার বেশি। ২৬ মার্চ যাত্রা করে আজ যদি দেশের দ্বিতীয় হতে পারি, তাহলে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে আমরা এক নম্বর হতে পারি।
ডাক বিভাগের ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়ে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, এখন গর্ব করে বলতে পারি আমার বিটিসিএল ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি তৈরি করেছে বিটিসিএল। পৃথিবীর কাছে দেখিয়ে দেব ডাক বিভাগ কীভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে টেলিটক শুধু ঘুরে দাঁড়াবে না, দেশের সেরা মোবাইল অপারেটর হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ডিজিটাল বাংলাদেশ আকষ্মিক কোনো ঘটনা নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০০১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা বলা ছিল। পরে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে ‘দিন বদলের ইশতেহার’ ঘোষণা করা হয়। তিনি বলেন, ইশতেহারে একটি পয়েন্ট উল্লেখ করা ছিল, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া হবে। এরপর বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর ঘোষণা দেন। আর এই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য পরামর্শ, দিকনির্দেশনার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
সাম্প্রতিক সময়ে মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে পাওনা আদায়ের বিষয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, বিদেশি কোম্পানি বাংলাদেশের টাকা মেরে খেতে পারবে না। বাংলাদেশের টাকা পরিশোধ করে তাদের যেতে হবে। তিনি আরও বলেন, টেলিকমে বিনিয়োগের জন্য বিশ্বের ছয়টি দেশ অপেক্ষা করছে। তাই যারা বলছেন যে, টাকা আদায় করতে গেলে টেলিকম কোম্পানি চলে যাবে, সেই ধারণা ভুল। এখন বিশ্ব ব্যাংকও বিনিয়োগ করতে চায়, কিন্তু আমরা তাদের টাকা নেব না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ এমপি বলেন, এখন একটি মোবাইল দিয়েই সব ধরনের কাজ করা যায়। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য সবার যে প্রচেষ্টা, তা চোখে পড়ার মতো। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. নূর-উর-রহমান সভাপতিত্বে সূচনা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র। ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস ২০১৯-এর মূল প্রতিপাদ্য উপস্থাপন করেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম। এছাড়া আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন এটুআই প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজার আনির চৌধুরী, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম অপরাজিতা হক এমপি, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য বেনজীর আহমেদ এমপি প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ‘সংযুক্তিতে উৎপাদন, দেশের হবে উন্নয়ন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস ২০১৯ উৎযাপন করেছে বাংলাদেশ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। দিবসটি উৎযাপনে সার্বিক সহায়তা করেছে ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন ‘নগদ’।