পিরোজপুরের কাউখালীতে ৬ মাস ধরে বেতন-ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরীরা। এতে তাদের পরিবার নিয়ে চরম আর্থিক সংকটে আছেন তারা। নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি কাউখালী উপজেলার সাবেক নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আউটর্সোসিংয়ের মাধ্যমে কাউখালী উপজেলায় গত ১৫ এপ্রিল ৩২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরীকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেন। পরে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক নিজ নিজ বিদ্যালয়ে সুপারিশ করা তালিকা থেকে ১নং প্রার্থীকে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগ প্রদান করেন।
জানা যায়, ৩২ টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ফলইবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আমরাজুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উত্তর হোগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম প্রহরী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ওই তিন বিদ্যালয়ে নিয়োগ বঞ্চিত প্রার্থীরা আদালতে মামলা দায়ের করেন। ওই প্রার্থীরা বাদে ২৯ জন দপ্তরি কাম প্রহরী যোগদানের পর থেকে এপর্যন্ত কর্মস্থলে নিয়মিত কাজ করেও ৬ মাস ধরে সরকারি কোন বেতন ভাতা পাচ্ছেন না।
ভুক্তভোগীরা জানান, বেতন ভাতার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগযোগ করলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তারা এখন পর্যন্ত তাদের বেতন বিল করেনি। আদালতে তিনটি বিদ্যালয়ের নিয়োগ নিয়ে মামলা থাকায় বাকি ২৯ টি বিদ্যালয়ে যোগদানকৃতরা বেতন বিল পাচ্ছেন না। এজন্য শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করলেও তারা আমদের বেতন বিল করছে না। এতে আমরা পরিবার নিয়ে অর্থ সংকটে দিন কাটাচ্ছি। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে বিষয়টি আমরা অবহিত করি। সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে দেখা করলে তিনি আমাদের বিল করার জন্য অফিস সহকারীকে বলেন। আমরা অফিস সহকারী কর্তৃক চাহিত কাগজপত্র অফিসে জমা দেই। এর কয়েকদিন পরে বিলের জন্য শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করলে জানতে পারি শিক্ষা অফিসার বেতন বিল না করার জন্য অফিস সহকারীকে বলেছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হাকিম বলেন, গত ১৮ আগস্ট কাউখালীতে যোগদানের পরে ২৯টি বিদ্যালয়ের দপ্তরিরা বেতন বিলের জন্য আমার কাছে আসলে আমি তাদের বেতন বিল করার জন্য অফিস সহকারীকে বলি। এর কিছুদিন পরে জানতে পারি আমার নামে অফিসের লোকজন প্রত্যেকের কাছ থেকে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে আদায় করছেন। ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি জানার পর আপাতত দপ্তরিদের বিল করতে নিষেধ করি। এরপরে দপ্তরিরা আমার সাথে দেখা করলে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা অফিসের কাউকে কোন টাকা দেননি বলে আমাকে জানান।
তিনি বলেন, কয়েকটি বিদ্যালয়ে দপ্তরী নিয়োগের বিষয়ে মামলা ও অভিযোগ থাকায় বিল দিতে বিলম্ব হচ্ছে। বিষয়টি সমাধান হলেই দপ্তরি কাম প্রহরীদের প্রাপ্য বেতন ভাতার বিল করে দেয়া হবে।